যে লক্ষ্যে ঢাকায় পা রেখেছিল শ্রীলঙ্কা, পুরোপুরি সফল বলা যায়। টেস্ট, টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজ জয় করেছে দ্বীপরাষ্ট্র। এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে যা জোগাবে আত্দবিশ্বাসের রসদ। অবশ্য সফরকারীদের আরও এক ম্যাচ বাকি। আজই সেই ম্যাচ। ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় কাল পূর্ণ বিশ্রামেই কাটিয়েছে ম্যাথুস বাহিনী। বাড়তি কোনো চাপ না থাকায় কাল দেশে ফিরে গেছেন দলের দুই কাণ্ডারি কুমার সাঙ্গাকারা ও তিলকারত্নে দিলশান। তাদের জায়গায় আসছেন লাহির থিরিমানে। অবশ্য এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে অংশ নিতে আগামীকালই ঢাকায় ফেরার কথা সাঙ্গাকারার।
লঙ্কানদের সফর শুরু ইনিংস ও ২৪৮ রানের জয় দিয়ে। চট্টগ্রামে অবশ্য ড্র হয় দ্বিতীয টেস্ট। ড্র হলেও টেস্টটি ছিল শুধু সাঙ্গাকারাময়। টাইগার বোলারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলে প্রথম ইনিংসে করেন ৩১৯ রান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করে নাম লেখান গ্রাহাম গুচের পাশে। ১৩৭ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সাঙ্গাকারা দ্বিতীয় ক্রিকেটার, যিনি একই টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি করেন। ১৯৯০ সালে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ভারতের বিপক্ষে ৩৩৩ ও ১১৯ রান করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার গুচ। সাঙ্গাকারার দ্যুতিতে আলোকিত টেস্টটি টাইগাররা ড্র করেছিল সমানতালে লড়াই করে। পরের চার ম্যাচে মুশফিকদের আর কোনো সুযোগই দেয়নি দ্বীপরাষ্ট্র। দুই ম্যাচের টি-২০ সিরিজে শেষ বলে জিতেছে দ্বীপরাষ্ট্র ঠিকই, কিন্তু সিরিজ নিজেদের হাতে তুলে নিতে কোনো সময়ক্ষেপণ করেনি। যদিও ম্যাচ দুটিতে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছিল টাইগাররা। প্রথমটি হেরেছিল শেষ বলে রান তাড়া করতে গিয়ে এবং দ্বিতীয়টি হেরেছিল রান আটকাতে যেয়ে।
গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলছিল ওয়ানডেতে। এবারও শুরু করেছিল দুর্দান্ত গতিতে। কিন্তু ক্যাচ মিস ও ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে দুই ম্যাচেই হেরেছে। প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয়টিতেও টাইগাররা ক্যাচ মিস করেছে চারটি করে। ক্যাচ মিসের সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে প্রথমটি ১৩ রানে ও দ্বিতীয়টি ৬১ রানে জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা। প্রথমটিতে ৬৭ রানে ৮ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর ক্যাচ মিসের মহড়ায় মেতেছিল স্বাগতিকরা। চার-চারটি ক্যাচ মিসের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ৮০ রানে ইনিংস খেলেন থিসারা পেরেরা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও একইভাবে ক্যাচ মিস করে স্বাগতিকরা।
এবার সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন সাঙ্গাকারা। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৬ নম্বর এবং সফরের তৃতীয় সেঞ্চুরি। দুই ওয়ানডেতে ক্যাচ মিসের পাশাপাশি অবশ্য ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্সও ছিল যাচ্ছেতাই। দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেননি কেউই।
আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ বলেই হয়তো টানা খেলার ধকল সামলাতে কাল সকালে দেশে ফিরে গেছেন শ্রীলঙ্কার সেরা ক্রিকেটার সাঙ্গাকারা। অবশ্য আগামীকাল আবার ফিরে আসবেন তিনি। যোগ দেবেন এশিয়া কাপ স্কোয়াডের সঙ্গে। হাতে ব্যথা পাওয়ায় দেশে ফিরে গেছেন দিলশান। সম্ভবত এশিয়া কাপে তার খেলা শেষ হয়ে গেছে। অবশ্য তার পরিবর্তিত ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাটসম্যান থিরিমানের ঢাকায় পা রাখার কথা। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার প্রথম ম্যাচ ২৫ ফেব্রুয়ারি, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।