বন্যার পানি নেমে গেছে অনেক আগে। কিন্তু বন্যার ক্ষত শুকায়নি এখনও। বন্যা আক্রান্ত অসহায় লোকজন একদিকে সংগ্রাম করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতে, আবার অন্যদিকে লড়তে হচ্ছে দু’মুঠো ভাতের সংস্থানে। বন্যা পরবর্তী সময়ে এলাকায় কাজকাম কমে যাওয়ায় দিনমজুর, শ্রমজীবী ও অসহায় লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে। এই সংকটময় মুহূর্তে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ২০ হাজার পরিবারের পাশে ত্রাণ হিসেবে খাদ্যসহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘বসুন্ধরা গ্রুপ’।
গত ৩০ মে থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বসুন্ধরা গ্রুপের ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়। সিলেটে জেলা পুলিশ এবং সুনামগঞ্জে জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন মিলে এই ত্রাণ অসহায় লোকজনের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছে। সিলেটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সোমবারও ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে প্রত্যেক থানার ওসি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়দের তালিকা করে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন এই ত্রাণ। থানাগুলোর ওসির নেতৃত্বে অনেক স্থানে অসহায় লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে। কঠিন এই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ত্রাণ পেয়ে অসহায় লোকজনের মুখে হাসি ফুটছে।
জকিগঞ্জ থানার গণিপুর গ্রামের অসহায় নূরজাহান বেগম ত্রাণ পেয়ে বেজায় খুশি। হাসিমুখে জানালেন, স্বামী-সন্তান না থাকায় বৃদ্ধ বয়সে তিনি খুবই কষ্টে আছেন। আগে এবাড়ি ওবাড়ি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় অনেক রোগবালাই শরীরে বাসা বেঁধেছে। তাই কাজেও যেতে পারেন না। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। বসুন্ধরার এই ত্রাণ পেয়ে অত্যন্ত খুশি। নূরজাহান বেগম হাত তুলে বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য দোয়া করেন।
এবার সিলেটে ভয়াবহ বন্যা হয়। ২০০৪ সালের পর এতো ভয়াবহ বন্যা দেখেননি সিলেট অঞ্চলের মানুষ। এই দু:সময়ে সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রথম দফায় সিলেটের ৭ হাজার পরিবারের জন্য পাঠানো হয় ত্রাণ। এরপর পাঠানো হয় ৫ হাজার প্যাকেট ত্রাণ। সবমিলিয়ে সিলেটের ১২ হাজার পরিবারের মধ্যে পৌঁছে বসুন্ধরার এই উপহার। এর আগে সিলেটে বেসরকারি কোন উদ্যোগে এতো বিশাল পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ হয়নি। এছাড়া সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য দুই দফায় ৮ হাজার প্যাকেট ও নেত্রকোনায় ১০ হাজার প্যাকেট ত্রাণ পাঠানো হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন