বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
মূল রচনা

শারদ উৎসবের পোশাক

শারদ উৎসবের পোশাক

মডেল : নিহারিকা হায়দার ♦ মেকওভার : জাকির হোসাইন জয় ♦ ছবি : শেখ সাদি ♦ পোশাক : কাপড়-ই-বাংলা

শরৎ মানে পূজা, পূজা মানে উৎসব-আনন্দ। প্রকৃতির মতো মহাসমারোহে বরণ করা হয় মা দুর্গাকে। আর উৎসবে বেশি প্রাধান্য পায় সাজ-পোশাক। পূজার ধুমধাম, আনন্দের সঙ্গে লাল-সাদা রঙের সখ্য বেশি। পাশাপাশি অন্য রঙের পোশাকেও শারদীয় উৎসব জমে উঠেছে ষষ্ঠী থেকে দশমীর দিনগুলোয়।  শারদ উৎসবের সাজ-পোশাক নিয়ে আজকের ফিচার।

শরৎ মানে পূজা, আর পূজা মানে আনন্দ, হৈ-হুল্লোড়। ষষ্ঠী দিয়ে পূজার আয়োজন শুরু হলেও রঙিন বিদায় দশমীতে। দুর্গাপূজার এই মহালয়ে একেক দিনের সাজ একেক রকম হলেও উৎসবের রংটা কিন্তু এক। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবের আমেজ, আনন্দ ও নিজের ব্যক্তিত্ব মিলিয়েই পোশাক কেনেন সবাই।

পূজায় কয়েক দিনজুড়ে পালন করা হয় উৎসব। সুতরাং মনের মতো সাজগোজের সুযোগটাও অনেক বেশি। একেক দিন একেক সাজে সেজে ওঠা যায়। দেবীর বোধনে পূজা শুরু হয় ষষ্ঠী দিয়ে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যারা বাইরে থাকতে চান তারা পছন্দের তাঁত, কটন, জামদানি কিংবা মানানসই শাড়ি পরতে পারেন। শাড়ি এক প্যাঁচেও পরতে পারেন, চাইলে কুঁচিও করতে পারেন। তবে এদিনের সাজটা তত গাঢ় হয় না। চোখে হালকা শ্যাডোসহ চিকন লাইনার আর পছন্দসই রঙের লিপস্টিক পরতে পারেন।

ষষ্ঠী দিয়ে পূজার মূল আয়োজন শুরু হলেও পূজা পুরোপুরি জমে ওঠে সপ্তমী থেকে। সপ্তমীর দিন সকালে পরার জন্য লাল, সাদা, কমলা রংগুলো মানানসই। এ রংগুলো সব ধরনের গায়ের রঙেই মানিয়ে যায়। যে কেউ এসব রঙে নিজেকে সাজাতে পারেন। আর চুলে ফুল ব্যবহার করলে বেশ একটা স্নিগ্ধ ভাব আসবে। সপ্তমীর দিনে সুতি, হাফ সিল্ক শাড়ি চলতে পারে। রাতে পরতে পারেন এন্ডি বা সিল্কের শাড়ি। সঙ্গে সোনা, রুপার ভারি গহনা। হাতভর্তি চুড়ি।

অষ্টমীর সাজটা হওয়া চাই একদম অন্য রকম। যেন সাজে জমকালো ভাবটাও ফুটে ওঠে। সাদা, লাল, কাঁচা হলুদ, গোলাপি এসব রঙের শাড়ি পরা যেতে পারে। পূজার সাজের জন্য শাড়িই প্রথম পছন্দ অনেকের কাছে। তবে কম বয়সী মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ, কুর্তাও পরে। কুর্তার সঙ্গে জিন্স বা লেগিংস পরাটা তো চলতি ফ্যাশন। অষ্টমীর সাজেও থাকে লালের আধিক্য। হাতভর্তি চুড়ি আর আলতা লিপস্টিকে মেয়েরা হয়ে ওঠে পুরোদস্তুর বাঙালি রমণী। চুলের বেণিতে থাকতে পারে একগোছা তাজা ফুল। আবার খোলা চুলেও পূর্ণতা পাবে পূজার সাজ।

নবমীর দিনে ভরপুর খাওয়া-দাওয়া আর আত্মীয়ের বাড়ি বেড়ানো। এ দিনে সকাল বা সন্ধ্যা আরতি সব সময়ই থাকতে পারে জাঁকজমক সাজ। একটু ভারি কাজের শাড়ি, লেহেঙ্গা বা থ্রিপিস পরা যেতে পারে এদিন। জর্জেট, কাতান বা সিল্কের শাড়িতে পুঁতি, জার্দসি বসানো থাকলে গ্লো আসবে। আজকাল সুতা ও জরির নজরকাড়া নানা কাজ থাকছে শাড়িতে। নবমীর সাজে শরতের আকাশের নীল, কাশফুলের সাদা, গাছপালার সবুজ এমন রংগুলো পোশাকে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর লাল-সাদা রঙের ছোঁয়া থাকতে পারে গয়নায়। গলা, কানে ও হাতে থাকবে ভারি গয়না। তবে মনে রাখতে হবে, সাজের আধিক্যে যেন হারিয়ে না যান।

শারদীয় দুর্গাপূজার প্রধান আকর্ষণ দশমী। দশমীর দুপুরে লাল-সাদা শাড়ি পরেন অনেকে। গরদের শাড়িও চাইলে পরা যায়। পুরনো ধাঁচের এ শাড়িই যোগ করবে ফ্যাশনের নতুন মাত্রা। এ রাতে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে যান। বাড়িতেও নানা আয়োজন থাকে। কাতান, বেনারসি শাড়ি রাতে তাই বেশ মানাবে। তবে যে ধরনের শাড়িই পরুন না কেন মিলিয়ে ব্লাউজ আর গয়না পরলে সাজে আসবে পূর্ণতা। শুধু শাড়ি নয়, থ্রিপিস, লেহেঙ্গাও পরা যেতে পারে। শাড়িতে অনীহা থাকলে সালোয়ার-কামিজও পরা যেতে পারে। সাদা কুর্তির সঙ্গে লাল পায়জামা আর লাল ওড়নাও বেশ মানাবে। সাদা শাড়ির সঙ্গে লাল নেটের ফুলহাতা ব্লাউজ খুব ভালো মানাবে।

পূজায় ঐতিহ্যবাহী সাজটা দেখতে ভালো লাগে। তাই চাইলে উৎসবের দিনগুলোতে একটু অন্যরকমভাবে সাজার সুযোগটা রয়েছেই। শাড়ি যেমনই হোক, গয়নাগুলো সাবেকি ধাঁচের পরলে বেশ মানাবে। শাড়ির সঙ্গে কানে ঝুমকা পরলে ভালো দেখায়। তেমনি সবসময় পরা হয় না এমন গয়না, যেমন টিকলি, নথ- এগুলোও পরা যেতে পারে। আর ফুলের সাজের আবেদন তো চিরন্তন।

শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসগুলো নিয়ে এসেছে দারুণ সব কালেকশন। কে-ক্রাফট, অঞ্জন’স, রঙ, বাংলার মেলা, দেশাল, সাদাকালো, আড়ং ও বিবিয়ানাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে রয়েছে পায়জামা-পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, ধুতি, সালোয়ার, ফিটেড কুর্তা, শেরওয়ানি, কুর্তির সমাবেশ।  দামও ক্রেতাসাধারণের হাতের নাগালে।

 

লিখেছেন- ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর