বাবা অন্ধ, তাই মা তার বাবাকে সাথে নিয়ে সারাদিন এর-ওর কাছে হাত পেতে যা পায়, তা দিয়েই চলে ছ’বছর বয়সী রবিনের সংসার। এদিকে শিশু শ্রেণিতে পড়ুয়া সালমা এসেছে ঈদ বস্ত্র নিতে, যার বাবা থেকেও নেই। শ্রমিক মা'ই সংসার চালায় তার।
এরকম নানা সমস্যায় জর্জরিত শতাধিক ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করেছে ‘আলোকিত মানুষ’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সবাইকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হাতে-হতে তুলে দেওয়া হয় নতুন কাপড়, সেমাই, চিনি আর দুধ। এসব পেয়ে একেকজনের চোখে যেন আনন্দের ঝিলিক। অনেকেই অবার সাথে সাথে কাপড়ের মোড়ক খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে- ‘আমারটা নাকি তোরটা ভাল’ তুলনায়। নতুন জামা পেয়ে একটু দূরে গিয়ে কয়েকজন রীতিমতো নাচানাচি শুরু করে।
এদের মধ্যে আকাশী বললো, 'নতুন জামাকাপড় দিবে বলে ভাইয়া-আপুরা অমাদেরকে আসতে বলেছিল। আমার জামাটা বেশি সুন্দর, অনেক ভালো লাগতেছে।'
আলোকিত মানুষ’র কার্যকরী সদস্য সিরাজাম মুনিরা তিথি বলেন, ‘অসহায় ও দরিদ্র মানুষের কাছে নিত্যদিনের দুমুঠো ডালভাত জোগার করতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয় সেখানে খুব ঘটা করে ঈদ উদযাপন করা একধরনের বিলাসিতাই বটে। এই খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের সাদামাটা ঈদে একটু রং আনতেই আমাদের এ প্রচেষ্টা। নতুন জামা পেয়ে ছোট বাচ্চাদের চোখে মুখে যে উচ্ছ্বাস দেখেছি, মনে হলো আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে।’
সংগঠনটির সভাপতি খোকন মিয়া বলেন, আসলে অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই এক আলাদা প্রশান্তি আসে। মানবতার সেবায় আমাদের এসব কাজ অব্যাহত থাকবে।
শেকৃবি মেডিসিন এ্যান্ড পাবলিক হেল্থ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম, মাইক্রোবায়োলজি এ্যান্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. উদয় কুমার মহন্ত, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান, ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড পোভার্টি স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক হায়দার খান সুজনসহ সংগঠনটির সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল