২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৮:৩৩

ঢাবির আবাসিক হল থেকে প্রতিবন্ধী ছাত্রনেতাই তাড়ালেন প্রতিবন্ধীদের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাবির আবাসিক হল থেকে প্রতিবন্ধী ছাত্রনেতাই তাড়ালেন প্রতিবন্ধীদের

রুমে পড়াশুনার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ করায় দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে  হলের কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক আবুল হোসেন। তিনি নিজেও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। বৃহস্পতিবার রাতে হলের ৩(ক) নং কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা হলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের রাসেল এবং বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম রানা।

তাদের অভিযোগ, আবুল হোসেন উচ্চস্বরে কথা বলে কক্ষে থাকা অন্যদের পড়াশুনার ব্যাঘাত ঘটান। তার আশ্রয়ে অনেকদিন থেকেই একজন বহিষ্কৃত ছাত্র রুমে মাদক সেবন করে। এসব নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেন কক্ষের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। আজ সেই অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরে সন্ধ্যার দিকে আবুল হোসেন অভিযোগকারীদের ধমকা-ধমকি শুরু করেন। তাদের জিজ্ঞেস করেন, ‘কেন তারা হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে।’ এ সময় আবুল হোসেন একটি লাঠি নিয়ে মারতে তেড়ে আসলে ভয়ে রুম থেকে বের হয়ে যান তারা।

ভুক্তভোগীরা আরও অভিযোগ করেন, আবুল হোসেন ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও পুনর্বাসন সংস্থা’ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি। ওই সংগঠনের যে কোন প্রোগ্রামে তাদের জোর করে নিয়ে যায় আবুল।

ডাকসু নির্বাচনের সময় ছাত্রলীগের সেসময়ের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী আবুল হোসেন হল সংসদে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

জানা যায়, মাদক সেবনকারী ওই ছাত্রের নাম মিলন ঘরামী। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনিও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। নিজেকে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করলেও তার কাছে হলকার্ড নেই। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে মিলন ঘরামী ডিন্স কমিটির একটি চিঠি দেখাতে চান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করে পরে আবুল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করেছে তা-ই জানার জন্য জিজ্ঞেস করেছিলাম। লাঠি নিয়ে মারতে যাইনি।

কক্ষে মাদক সেবনের বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে অবগত করেছেন বলে জানান আবুল।

ঘটনার বিষয়ে হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান বলেন, এ নিয়ে আবুল হোসেনকে হল সংসদে তিরষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু এখন অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। প্রভোস্ট স্যারও বিষয়টি জানেন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার কারণে শিক্ষকগণ ব্যস্ত থাকায় ২৭ তারিখের পরে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলেছেন।

এর আগে, হল সংসদের সভায় চেয়ার নিয়ে মারামারির করতে উদ্যত হয়েছিলেন আবুলসহ সংসদের আরেক নেতা।  

তবে, বহিষ্কৃত একজন শিক্ষার্থী কীভাবে হলে থাকছেন এ বিষয়ে জানতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিজামুল হক ভুইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।  

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর