বিশ্ববিদ্যালয় হল নিজেদের তৈরি করার জায়গা। নিজের অধিকার, নিজের ন্যায্য দাবি আদায় করার যোগ্যতা এবং শিক্ষা নেওয়া, জ্ঞান তৈরী ও জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার জায়গা। নিজেকে সচেতন করার জায়গাও এই বিদ্যাপীঠ। তেমনি নিজেদের দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে যেভাবে সোচ্চার হয়েছেন তাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ মনে করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময় নিজেদের অধিকারে সচেতন, তারা এখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করে না। তারই অন্যতম বহিঃপ্রকাশ ঘটে যাওয়া ঘটনার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ। এছাড়াও তারা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আলোকে আন্দোলন সবসময় চলমান থাকুক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি (সেপ্টেম্বর) মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের লতিফ হলের ডাইনিংয়ের খাবারে বড়শি, বিনোদপুরে নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা, স্থানীয়দের কর্তৃক শিক্ষার্থী মারধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে স্থানীয়দের ডাকাতি ঘটনার প্রত্যেকটিতে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার হয়েছেন। আন্দোলন করে নিজের দাবি আদায় করেছেন।
দাবি আদায়ের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো গায়ে আঘাত লাগলে সবাই এক হয়ে তার প্রতিবাদ করতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পারেন নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে। তারই অন্যতম প্রমাণ গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো। এছাড়া বিগত দিনের বিভিন্ন অধিকার আদায়ে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কারণেই আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গোটা দেশের কাছে এতটা পরিচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, ‘জাতীয় যে কোনো ইস্যুতে সবসময় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে ছাত্রসমাজ। শিক্ষার্থীরা একবদ্ধ হলে সব কিছুই সম্ভব। যুগে যুগে দেশের যত অর্জন তার পিছনে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। তাই আমি মনে করি যৌক্তিক দাবি আদায়ে সবসময় শিক্ষার্থীদের সোচ্চার থাকা উচিৎ।’
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী যদি কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে, যেমন উঠেছিল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তাহলে শিক্ষার্থীদের উপর প্রশাসন কোন কিছু চাপিয়ে দিতে পারবে না। এবং তাদের অধিকার সবসময় বজায় থাকবে।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল