২২ মে, ২০২৪ ১৭:০৩

জবির মেডিকেল সেন্টার: ২০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসক ২ জন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:

জবির মেডিকেল সেন্টার: ২০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসক ২ জন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অধ্যয়ন করছেন প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী। আর এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ২ জন। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সেবা দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন কর্মরত চিকিৎসকরাও। ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা।

দু'জন ডাক্তারের পাশাপাশি, তিনজন মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট, দু'জন অফিস সহকারী ও একজন নার্সসহ সর্বমোট আটজন জনবল দিয়ে চলছে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ৫০০ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর চিকিৎসা সেবা। পাশাপাশি রয়েছে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস।

জানা গেছে, জবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসাসেবা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভাবন-অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তাদের অভিযোগ, যেকোনো অসুখের চিকিৎসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে দেওয়া হয় প্যারাসিটামল। এছাড়া বিশেষ রোগে চিকিৎসা দিতে নেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। অনেক সময় প্যারাসিটামলও পাওয়া যায় না এই চিকিৎসাকেন্দ্রে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, আমরা নতুন করে কিভাবে চিকিৎসক নিয়োগ দেব পদ তো নেই। ইউজিসির কাছে আবেদন করেছি, তারা লোকবল নিয়োগে পদ দিলে আমরা নতুন করে দিতে পারব।

বেশিরভাগ সময় শিক্ষার্থীরা জটিল সমস্যা কিংবা বড় কোনো রোগের নিয়ে আসলে তাঁদের হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। এছাড়াও গাইনি বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব বহুদিনের। চুলকানির সমস্যা নিয়ে গত সপ্তাহে মেডিকেল সেন্টারে যাই। কিন্তু সেখানে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কোনো ডাক্তার নেই। বাধ্য হয়ে মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার দেখাতে হয়েছে।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, মেয়েদের অনেক সমস্যা হয়। এজন্য মাঝেমধ্যে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে সমস্যা হয়। আপসোস আমাদের একটা মেডিকেল সেন্টার আছে নামেমাত্র কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নেই। এমনকি আমাদের একমাত্র ছাত্রী হলেও কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। 
 
তবে জবি মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান ডা. মিতা শবনম বলেন, শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য এখানে আসেন কিন্তু আমরা তাদের যথাযথ সেবা দিতে পারছি না। এতে আমাদের নিজেদেরও খারাপ লাগে। গত ১২ বছর ধরে দু'জন চিকিৎসক দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি কোনোরকম। 

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে আমরা সব ধরনের সেবা দিতে পারছি না শিক্ষার্থীদের। ৮ জন জনবল দিয়ে কোনোভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার চলতে পারে না। এখানে আরও অনেক বেশি লোকবলের প্রয়োজন। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, আমাদের তো ইউজিসি পদ না দিলে আমরা কিভাবে নিয়োগ দেব। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে তারপরও আমি আসার পর থেকে চেষ্টা করছি নতুন করে মেডিকেল সেন্টারের অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়াতে।

তিনি আরও বলেন, এখানে তো সব ধরনের ওষুধ নেই এটা সত্যি। যতটুকু বাজেট দেয় ইউজিসি তা সামান্য বললেই চলে। আমি বাজেট বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করেছি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি হাসপাতালগুলোকে আমি অনুরোধ করব আমাদের শিক্ষার্থীদের জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর