শিরোপা জিতে কাল সকালে ঘরে ফিরে গেছে শ্রীলঙ্কা। তারপরও রয়ে গেছে এশিয়া কাপের রেশ। রেশ কাটার আগেই ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে আইসিসির সবচেয়ে বড় ইভেন্ট টি-২০ বিশ্বকাপের। দলগুলো আসতে শুরু করেছে আসরে অংশ নিতে। খেলতে শুরু করেছে প্রস্তুতি ম্যাচ। তবে কালই আনুষ্ঠানিকভাবে টি-২০ বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সংবাদ সন্মেলন দিয়ে। টুর্নামেন্টে পুরুষ বিভাগে ১৬ এবং মহিলা বিভাগে অংশ নিবে ৮ দল। ৬৫টি খেলা হবে মিরপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠ বলে টি-২০ বিশ্বকাপকে ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। এশিয়া কাপে ব্যর্থ হওয়ার পরও তাদের প্রত্যাশার পারদ অনেক উপরে। ভালো করেই জানেন মুশফিক। জানেন বলেই এশিয়া কাপের ব্যর্থতাকে পাথর চাপা দিয়ে টাইগার অধিনায়ক ঘুরে দাঁড়াতে চান টি-২০ বিশ্বকাপে। আফগানিস্তানকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে চান এশিয়া কাপে হারের।
এশিয়া কাপের গত আসরে ফাইনাল খেলে প্রত্যাশার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মুশফিকরা। কিন্তু এবার পাঁচ দলের টুর্নামেন্টে হতাশ করেছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের। এরমধ্যে আনকোরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে হার কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি দেশবাসী। পারেননি মুশফিকরা। তাই টি-২০ বিশ্বকাপেই আফগানদের হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে চান টাইগার অধিনায়ক, 'এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটার মাশরাফি ভাই, তামিম ও সাকিব খেলেননি। পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলতে পারিনি। ফতুল্লায় ওই ম্যাচের পর এখন আমাদের পুরো ধারণা রয়েছে তাদের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে। আমরা চাই এশিয়া কাপের হারের প্রতিশোধ নিতে।'
দুই ধারায় বিভক্ত এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ। প্রথম ধারায় ১৬ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়েসহ আইসিসির ছয়টি দেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলবে বাছাই পর্ব। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল খেলবে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। বাছাই পর্বে বাংলাদেশ খেলবে 'বি' গ্রুপে। টাইগারদের বাছাই পর্ব শুরু হবে আফগান ম্যাচ দিয়ে। ১৬ মার্চের ওই ম্যাচ জিতলেই মোটামুটি চূড়ান্ত পর্ব প্রায় নিশ্চিত মুশফিকদের। পরের দুটি নেপাল ও হংকংয়ের বিপক্ষে। সে হিসেবে বাছাই পর্বে খেলার নিশ্চয়তা পেতে টাইগারদের মুল টার্গেট আফগান ম্যাচ। সেটা জিততে চান টাইগার অধিনায়ক মুশফিক, 'প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। এশিয়া কাপে তাদের কাছে হেরেছি। তারপরও আমি মনে করি সব দিক দিয়ে আমরাই এগিয়ে। তবে এটাও ঠিক টি-২০ ম্যাচে সব কিছু শক্তির উপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে দিনের উপর। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। আমরা নির্দিষ্ট দিনটাতে ভালো খেলতে চাই। জানি আমাদের উপর চাপ রয়েছে। তারপরও সেরাটা খেলতে পারলে সবকিছু অন্যরকম হবে। আমরা ভালো করতে এখন মুখিয়ে আছি। সেটা আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়েই শুরু করতে চাই।'
এশিয়া কাপ খেলার পর রয়ে গেছে আফগানিস্তান। এখানকার কন্ডিশন অনেকটাই পরিচিত এখন আফগান ক্রিকেটারদের। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটেও অনেক আফগান খেলেছেন। তাই প্রতিপক্ষ হিসেবে একেবারে ফেলনা নয় যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। টি-২০ বিশ্বকাপে আফগানিস্তান শক্ত প্রতিপক্ষ হলেও টি-২০ বিশ্বকাপ বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়। ২০০৭ সাল থেকে টি-২০ বিশ্বকাপে খেলছে টাইগাররা। প্রথমবার শুধু সুপার এইট খেলতে পেরেছিল। পরের আসরগুলো মরীচিকা হয়েই রয়েছে। এবার ঘরের মাঠে আসর। তাই প্রত্যাশার বেলুনটা অনেক বেশি। ভালো করেই জানেন মুশফিক, '২০০৭ সালে শুরুটা ভালো হলেও পরবর্তীতে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। অন্য দলগুলোর মতো খুব বেশি টি-২০ ম্যাচ খেলা হয় না আমাদের। এজন্যই হয়তো এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে আমরা ভালো করতে পারছি না। তবে এবার আমাদের লক্ষ্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি ভালো খেলা। আপাতত সব ভাবনা ওই ম্যাচকে ঘিরেই। এরপর ভাববো নেপাল ও হংকং ম্যাচ নিয়ে।' শ্রীলঙ্কা সিরিজ ও এশিয়া কাপে ইনজুরি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছিল। টি-২০ বিশ্বকাপে ইনজুরি না থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই জানান টাইগার অধিনায়ক। এছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপে আবারও উইকেট কিপিং করবেন বলে জানান মুশফিক। যাক আফগান যুদ্ধে নামার আগে এটা সুখকর সংবাদই ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য।