রাত পোহালেই আগামীকাল বুধবার কলকাতার ইডেনে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টেন পর্বে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে চলেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি টি টোয়েন্টি এশিয়া কাপে প্রথমে শ্রীলঙ্কা এবং পরে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল টাইগাররা। ওই টুর্নামেন্টে রানার্স আপ হয় লাল-সবুজের দল।
এরপর টি টোয়েন্টির বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে মাশরাফির দল। ধর্মশালায় যোগ্যতা অর্জন পর্বে ৩ টি ম্যাচের দুইটি খেলে ২ টিতেই জয় পেয়েছে টাইগাররা। ১ টি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেছে। জয়ের সেই মনোবল নিয়েই ২৫ বছর পর ইডেনের মাঠে নামছে বাংলাদেশ।
১৯৯০ সালে ২৫ ডিসেম্বর এশিয়া কাপের ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম। এরপর ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত-কেনিয়া ত্রিদেশিয় সিরিজের ফাইনালে ইডেনে খেলার সুযোগ সামনে আসলেও সেবার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। পরবর্তীকালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইপিএল)-এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে একমাত্র সাকিব আল হাসান ইডেনে খেলে গেলেও এই প্রথমবারের মতো কলকাতার মাঠে নামবে বাংলাদেশের জাতীয় দলটি।
তাই একদিকে পাকিস্তানের মতো টিমকে হারানোর পাশাপাশি যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচেও সেরা পারফরমেন্স করা অন্যদিকে দীর্ঘদিন পরে কলকাতার ঐতিহাসিক ক্রিকেট গ্রাউন্ড ইডেনে কলকাতার একটা বিশাল সংখ্যক দর্শকদের সমর্থন-সবমিলিয়ে সব মিলিয়ে রীতিমতো টগবগ করে ফুটছে টাইগাররা। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের মতো মূল পর্বের ম্যাচগুলিতেও সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতাও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বজায় রাখতে মাঠে নামবে মাসরাফি-সাকিবরা। তবে বিপক্ষ যেখানে পাকিস্তান সেখানে একটু বাড়তি চিন্তা নিয়েই মাঠে নামতে হচ্ছে লাল-সবুজের দলকে।
এদিকে পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ ঘিরে যথেষ্ট উন্মাদনা কলকাতা ক্রিকেট অনুরাগীদের কাছে। মাঠে গিয়ে ম্যাচ দেখার জন্য অনেকেই একটা টিকিটের জন্য হা পিত্যেশ হয়ে খুঁজছেন। তবে টিকিট পাক আর নাই পাক এই ম্যাচে বাংলাদেশকেই সমর্থন করবে কলকাতা’র ক্রিকেট অনুরাগীরা। এই ম্যাচ দেখতে যারা ইডেনে উপস্থিত থাকবেন তারা তো বটেই কিন্তু যারা বাসায় বসেই টিভির পর্দায় এই ম্যাচ দেখবেন তারাও পদ্মা পাড়ের ১৬ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হয়েই গলা ফাটাতে চান। তারাও চান এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে হারানোর পুনরাবৃত্তি। কিন্তু সেটা কি সম্ভব?
এর উত্তর দিয়েছেন উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের বাসিন্দা ক্রিকেটপ্রেমী ইন্দ্রজিৎ কুন্ডু। আগামীকাল বিকেলেই মাঠে গিয়ে ম্যাচ দেখবেন তিনি। ইন্দ্রজিৎ জানান আগামীকালের ম্যাচে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই সমর্থন করবো। আমি চাই পাকিস্তানকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়ে বাংলাদেশ যনে পরে ব্যাট করে। কারণ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশ বেশি অভিজ্ঞ। ইন্দ্রজিৎ আরও জানান গত দুই-তিন বছর ধরে সীমিত ওভারে বাংলাদেশ যে ক্রিকেট উপহার দিচ্ছে তা এক কথায় অনবদ্য। বাংলাদেশের বিস্ময় বোলার মুস্তাফিজুর রহমান, অধিনায়ক মাশরাফি, সাকিব, তামিম ইকবাল, আল আমিন হোসেন, সৌম্য সরকার, তাসকিনরা যে ক্রিকেট খেলছে সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বিশ্বের যে কোন টিমকে রুখে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তারা।
তবে কলকাতার কাছেই বারাসতের বাসিন্দা সুদীপ্ত চক্রবর্তী’র ইচ্ছা থাকলেও পেশার তাগিদে এই ম্যাচ দেখতে মাঠে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তিনি। তাই অফিসে কাজের ফাঁকেই টিভির সামনে বসেই এই ম্যাচ দেখবেন সুদীপ্ত। তাঁর কাছে এই ম্যাচ ফিফটি-ফিফটি। দুই দলই জেতার জন্য ঝাঁপাবে। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বাংলাদেশকেই সমর্থন করবো।
এদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুস্তাফিজুরকে বাংলাদেশ খেলাতে পারবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজর খালেদ মেহমুদ সুজান মুস্তাফিজুরকে নামানোর ব্যাপারে আভাস দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ মার্চ ১৬/ সালাহ উদ্দীন