শিরোনাম
শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মালদ্বীপে বাংলাদেশিদের জীবন ও জীবিকা

জিন্নাতুন নূর

মালদ্বীপে বাংলাদেশিদের জীবন ও জীবিকা

২০১৭ সালে মালদ্বীপে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ নাগরিকের মধ্যে লাখখানেক বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের কেউ ব্যবসা আবার কেউ হোটেল-রেস্টুরেন্টে রান্নার কাজ করতেন। কেউবা হোটেলের ম্যানেজার, কেউ ওয়েটার বা হোটেলবয়। এমনও অনেক বাংলাদেশি দেখা যায়, যারা রাস্তাঘাট তৈরির কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের সঙ্গে জড়িত। মালদ্বীপের সড়কগুলোতে বিভিন্ন স্যুভিনিরের দোকান এবং খাবার দোকান এমনকি সাগরে ভেসে থাকা বিলাসবহুল ইয়োটেও বাংলাদেশিদের কাজ করতে দেখা যায়।

মালদ্বীপের হুলহুমালে ও মাহফুশি দ্বীপ দুটি ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার রাস্তাঘাট, হোটেল ও রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। যেন গোটা মালদ্বীপই  বাংলাদেশিরা চালাচ্ছেন। অর্থাৎ ভ্রমণপ্রেমীদের এই স্বর্গরাজ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ করছেন। এমনকি কিছু জায়গায় বাংলাদেশি শ্রমিক ও কর্মীর সংখ্যা মালদ্বীপের স্থানীয় শ্রমিকের চেয়েও বেশি। সাধারণত ভ্রমণের জন্য মালদ্বীপের হুলহুমালে ও মাহফুশি দ্বীপে বছরের সব সময়ই ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় করেন। এ জন্য এই দ্বীপ দুটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ও চাহিদাও বেশি। অবশ্য বাংলাদেশি শ্রমিক ও কর্মী ছাড়াও অন্যান্য দেশের মধ্যে ফিলিপাইন, ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান কিছু নাগরিক মালদ্বীপে কাজ করছেন। হুলহুমালে দ্বীপের পাঁচ তারকা হোটেল রিভেতি বিচ হোটেলে কাজ করেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। তারা কয়েক বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন। এর মধ্যে এক কর্মী ইদ্রিস জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি মালদ্বীপে কাজ করছেন। এই দ্বীপের ‘এশিয়ানা’ রেস্টুরেন্টে কথা হয় আরও কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে। তাদের কেউ রান্নার কাজ আবার কেউ ওয়েটারের কাজ করছেন। এদের মধ্যে একজন কর্মী জানান, আগে তিনি একটি পাঁচতারকা আইল্যান্ড রিসোর্টে কাজ করতেন। কিছু দিন আগেই এখানে কাজ শুরু করেছেন। মাহফুশি দ্বীপে কথা হয় বরিশালের আরেক যুবকের সঙ্গে। তিনি এক দশক আগে মালদ্বীপে এসে রাস্তাঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রমের ফল হিসেবে এখন তার নিজের একটি স্যুভিনিরের দোকান আছে। আর সেই দোকানে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক যুবকের সঙ্গে। মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন কাজ করে তিনি মালদ্বীপের একটি ভাসমান বিলাসবহুল ইয়োটে ‘কানা’ত শেফের কাজ করছিলেন। বিদেশি পর্যটকদের কাছে তার রান্না করা খাবারের বেশ কদর। এই ইয়োটেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন আরেক বাংলাদেশি। ইয়োটের ক্যাপ্টেনের পরই পুরো জলযানটির দেখাশোনার কাজ করতে হয় তাকে। এ ছাড়া হুলহুমালে দ্বীপে অনেক বাংলাদেশিকেই রাস্তাঘাট ও ইমারত নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেছে। বেশ কিছু বাংলাদেশি স্পিডবোটও চালাচ্ছেন। কেউ ছোট ছোট মুদি দোকান চালাচ্ছেন। কিছু বাংলাদেশিকে পর্যটকদের মালামাল টানতেও দেখা যায়।  সব মিলিয়ে বলাই যায়, পর্যটকদের এই স্বর্গরাজ্যে বাংলাদেশিদের কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়ার মতো।

সর্বশেষ খবর