সিলেটে টাকার বিনিময়ে ‘নন কোভিড সার্টিফিকেট’ দিয়ে বিদেশযাত্রীদের সাথে প্রতারণার সংবাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশের পর ডা. এ এইচ এম শাহ আলমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। করোনা ‘পজেটিভ’ হওয়ার তথ্য গোপন করে তিনি চেম্বারে রোগী দেখতেন। বেসরকারি হাসপাতালেও যেতেন রোগী দেখতে। এসব অভিযোগে র্যাব তাকে আটক করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে তিনি জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছেন। পরে আদালত তাকে চার মাসের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘টাকা পেলেই সার্টিফিকেট দেন ডা. শাহ আলম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর র্যাব-৯ তাকে আটক করে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে করোনার সার্টিফিকেট জালিয়াতির কথা অকপটে স্বীকার করেন ডা. এ এইচ এম শাহ আলম (সাগর)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ১২ জুলাইন শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নমুনা দেন ডা. এ এইচ এম শাহ আলম সাগর। ১৩ জুলাই তার করোনা রিপোর্ট আসে পজেটিভ। কিন্তু এই তথ্য গোপন রেখে তিনি নিয়মিত চেম্বারে রোগী দেখতে থাকেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশর্^বর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালেও তিনি রোগী দেখতে যান। তার করোনা পজেটিভের বিষয়টি জানাজানি হলে ১৭ জুলাই থেকে তিনি চেম্বার বন্ধ করেন। ডা. শাহ আলমের করোনা পজেটিভ শোনার পর থেকে ওই সময়ের মধ্যে যারা তার সেবা নিয়েছেন তাদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে ডা. শাহ আলমকে নিয়ে নগরীর মধুশহীদস্থ মেডিনোভার চেম্বারে যায় র্যাব। চেম্বার তল্লাশির পর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় জানান, টাকার বিনিময়ে করোনার সার্টিফিকেট দেয়া, ওসমানী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারের ভুয়া পদবী ব্যবহার ও করোনা পজেটিভ হওয়ার তথ্য গোপন করে রোগী দেখার কথা স্বীকার করেছেন ডা. শাহ আলম। পরে তাকে চার মাসের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের জেলের আদেশ দেয়া হয়েছে।
র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম জানান, ডা. শাহ আলম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রবাসীদের করোনার সার্টিফিকেট দিতেন। ভুয়া পদবী ব্যবহার করে রোগীদের বিভ্রান্ত করতেন। এছাড়া করোনা পজেটিভের তথ্য গোপন করে তিনি রোগী দেখে মারাত্মক অন্যায় করেছেন। এসব অভিযোগ অকপটে ডা. শাহ আলম স্বীকারও করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম