রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সংস্কৃতি হচ্ছে জীবনের দর্পণ। সংস্কৃতিই ব্যক্তি, জাতি ও দেশের প্রকৃত পরিচয় বহন করে। সংস্কৃতি একদিনে বা হঠাৎ করে গড়ে উঠে না। দিনে দিনে মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাস এবং আচার-আচরণ, জীবনমান, চিত্ত-বিনোদনের উপায় ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে সংস্কৃতি। প্রতিদিন সাধনার দ্বারা সংস্কৃতিকে আয়ত্ত করতে হয়। আমরা যা ভাবি, পছন্দ করি-তাই সংস্কৃতি। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহু পুরানো ও সমৃদ্ধশালী।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে দেশি-বিদেশী লোকসংস্কৃতি গবেষক ও শিল্পীদের নিয়ে আজকের আন্তর্জাতিক লোকসংস্কৃতি উৎসব দেশ-বিদেশের লোকগবেষক ও শিল্পীদের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে এবং এ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জীবনমান উন্নয়নে সুদূর প্রসারী ভূমিকা রাখবে।
আজ বিকালে মোক্তারপাড়া মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে আন্তর্জাতিক লোকসংস্কৃতি উৎসব-২০১৮ এর উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে তিনি পুরাতন জেলখানায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ই্নকিউভিশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে সারা বিশ্ব আজ একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে। আকাশ-সংস্কৃতি দেশ ও জাতির সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে। তাই আকাশ সংস্কৃতির ডামাডোলে গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না। বরং তা থেকে ভালো দিকগুলো গ্রহন এবং মন্দ দিকগুলো বর্জন করতে হবে। সারাদেশে আমাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আশা করি আমাদের দেশের কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, নির্মাতা, সংগ্রাহক, গবেষকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তা সংরক্ষণে এগিয়ে আসবেন। সেগুলো সংগ্রহ করে তা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লোকগবেষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার। বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সবুজ কলি সেন, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উৎসব আয়োজক কমিটির আহবায়ক মতিয়র রহমান খান, দীনেশ চন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী দেবকনা সেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান শেলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু দলীয় প্রতীক নৌকা প্রদান করেন। এছাড়াও পৌর মেয়র আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম খান পৌর সভার পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে নগরীর চাবি উপহার দেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিভিন্ন দেশের লোকসংস্কৃতি শিল্পীবৃন্দ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার