চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এমদাদুলক হক নামের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ হওয়ার অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে তিন ছাত্রলীগ কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
এছাড়াও উক্ত পদে এমদাদের অংশগ্রহণ সাপেক্ষে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সভা কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তদন্ত কমিটির প্রধান ও সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহম্মদ।
তিনি বলেন, এমদাদের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মোকসেদ আলী, আনোয়ার হোসেন, আসিফ মাহমুদ শুভ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
হেলাল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে উক্ত ঘটনায় তিন জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এতে জড়িতদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। অতঃপর এমদাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত পূর্বক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পদে পুনঃ পরীক্ষা নেয়া হবে। ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত থাকলে পরবর্তীতে তদন্তে তা প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমদাদুল হক জানান, আমাকে অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত শরীফ উদ্দিন, জাহেদসহ কয়েকজন বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে তারা কিভাবে উক্ত ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নয় সেটা বুঝে আসে না। তদন্ত প্রতিবেদনটি হাতে পেলে পুনঃপরীক্ষার ব্যাপারে আমার প্রতিক্রিয়া জানাতে পারব।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পদে মৌখিক পরীক্ষা দিতে এলে এমদাদকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আসে শাখা ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের নেতা- কর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় তাকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে তুলে নিয়ে মারধর করে শিবির আখ্যা দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। পরে শিবির সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ তাকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
পরে ৩০ মার্চ ঘটনার বিবরণসহ একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সদস্যদের পাঠান এমদাদ। পরদিন ৩১ মার্চ সাত জনকে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম কামরুন্নাহার রুমীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের আনোয়ার হোসেন, একই বিভাগের আসিফ মাহমুদ, মোকসেদ আলী ওরফে মীলু প্রামাণিক, একই বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের জাহিদুল হাসান, রফিকুল ইসলাম, একই বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের আসির উদ্দিন ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শরিফ উদ্দিন। এছাড়া এই মামলায় আসামি হিসেবে আরো ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে ৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহম্মদকে প্রধান, সহকারী প্রক্টর প্রণব মিত্রকে সদস্য সচিব ও আরেক সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমানকে সদস্য করে গঠিত এ কমিটিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন