ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারই এই অঞ্চলের শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। নেতানিয়াহু সরকার একের পর এক আক্রমণ ও উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
এরদোগান বলেন, আমি ইসরায়েলের ওপর প্রভাব রাখে এমন দেশগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি, তাদের ‘বিষাক্ত বক্তব্য ও প্ররোচনায়’ কান দেবেন না। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য সংলাপের মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, ইরান, গাজা এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ইসরায়েলের হামলা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, সম্প্রতি ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনা ভণ্ডুল করে দেওয়া। এই ঘটনাই প্রমাণ করে, নেতানিয়াহু এবং তার সরকার কোনো সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চায় না। তার জায়নবাদী উচ্চাকাক্সক্ষা, একমাত্র লক্ষ্য হলো আমাদের অঞ্চল ও পুরো বিশ্বকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া। তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এরদোগান বলেন, আমরা আর নীরব দর্শক হতে পারি না। মুসলিম দেশগুলোর উচিত সম্মিলিতভাবে চাপ প্রয়োগ করা, যাতে এই আগ্রাসন থামে।
জয় ইরানেরই হবে : ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের নবম দিনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য রেখেছেন। ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে এরদোগান স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন- তিনি আশাবাদী যে, জয় ইরানেরই হবে।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার বক্তব্যে ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দফা পারমাণবিক আলোচনার ঠিক আগেই ইসরায়েলের হামলাগুলো আলোচনার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তার মতে, এটি প্রমাণ করে যে ইসরায়েল আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায় না। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ১৩ জুন (শুক্রবার) ইসরায়েল যখন প্রথম হামলা চালায়, তখনো ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা চলছিল। এরদোগান বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নন। ওআইসি বৈঠকে উপস্থিত কূটনীতিকদের প্রতি এরদোগান আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি ইসরায়েলের বিষাক্ত কথায় কান না দিয়ে একটি বৃহত্তর সংঘাত এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে ইসরায়েলের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আল-জাজিরা ও রয়টার্স