ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি দীর্ঘদিন ধরেই শত্রুতামূলক নীতি অনুসরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র-এমন অভিযোগ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পূর্ণভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণ।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নির্মাণ প্রকল্পের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন মাহমুদ আব্বাস। রাশিয়ার একটি গণমাধ্যমকে বুধবার দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতির প্রতি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকে এখন আর অবৈধ মনে করছে না ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিবিসি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। ওয়াশিংটন বিষয়টিকে এখন আর আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে করছে না। এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, এতদিন ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে পশ্চিম তীরের মর্যাদা নির্ধারণের চেষ্টা ছিল। তিনি বলেন, ‘সব পক্ষের আইনি বিতর্কগুলো সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
পম্পেও বলেন, ‘সেখানে বেসামরিক নাগরিকের বসতি স্থাপনকে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে আখ্যা দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। এতে শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে।’
১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের এই অঞ্চলে জোরপূর্বক দখলে নিয়ে নেয় এবং সেখানে বসতিস্থাপন করে। এই অঞ্চল নিয়ে ইসরায়েল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এই বসতি স্থাপনকে স্বীকৃতি দেননি। কিন্তু তার পরে ক্ষমতায় আসা ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই নীতির পরিবর্তন ঘটালেন।
মার্কিন প্রশাসনের এ সম্মতির সমালোচনা করে খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস তাদের অবস্থান পরিবর্তনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগের অবস্থান পরিবর্তন করায় মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে।’
এদিকে, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এ অবৈধ দখলদারিত্বকে মার্কিন প্রশাসন বৈধতা দেয়ায় কানাডাও তাদের নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছে। দেশটি আগে দখলদার ইসরায়েলকে সমর্থন করলেও গত দশ বছরে এই প্রথম কানাডা ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জাতিসংঘ রেজুলোশনে ভোট দিয়েছে। কানাডা মনে করে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার