ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া অন্তত সোয়া লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পদক্ষেপের বিষয়ে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
গত রাতে এ বৈঠক হওয়ার কথা। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধেই এর আয়োজন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সব কটি পক্ষই এতে অংশ নেবে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় সদস্য ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, আলবেনিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্র তাদের অবস্থান জানানোর কথা।
জানা গেছে, ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ রাশিয়া ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নতুন আলোচনায় বসতে চলেছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ল্যাভরভ ও ব্লিনকেন মঙ্গলবার (আজ) টেলিফোনে কথোপকথন করবেন।’ যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন রবিবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও রাশিয়া বলছে তারা কোনো যুদ্ধ চায় না। তবে তারা নিশ্চয়তা চায় ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হবে না।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ‘প্রায়’ প্রস্তুত - যুক্তরাষ্ট্র : যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে নেতারা বলেছেন, রাশিয়ার ওপর দ্বিপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিল প্রস্তুতের কাছাকাছি রয়েছেন তারা। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে ‘চূর্ণকারী’ এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ডেমোক্র্যাটদের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর বব মেনেনডেজ ও সিনেটর জেমস রিস বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্র যে বার্তা দিয়েছে তা গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনে কোনো ধরনের আগ্রাসন অনাকাক্সিক্ষত। সিএনএনকে সিনেটর বব মেনেনডেজ বলেন, ‘আমি বলব আমরা লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি রয়েছি।’
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থন ও রাশিয়াকে শাস্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের উভয় দলের শক্তিশালী সমাধান রয়েছে। সিনেটর বব মেনেনডেজ সিনেটর জেমস রিসকে চলতি সপ্তাহের মধ্যে সর্বসম্মতভাবে নিষেধাজ্ঞা চুক্তি সম্ভব কি না প্রশ্ন করেন। জবাবে জেমস রিস জানান, সম্ভব।
গত বছর থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সমাবেশ করেছে ক্রেমলিন। ইউক্রেন ঘিরে জোরদার করা হয়েছে রুশ সামরিক মহড়া। এসবের জেরে পশ্চিমাদের দেশগুলোর দাবি, ইউক্রেনে হামলা চালাবে রাশিয়া। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে পূর্ব ইউরোপে সেনা বাড়ানোর কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ন্যাটোর সদস্য হতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে মস্কোর। কোনোভাবেই প্রতিবেশী দেশটিকে ন্যাটোর অংশ হতে দিতে চায় না তারা। সবশেষ ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকেও একই বিষয় তোলা হয়। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না। উত্তেজনা কমাতে মার্কিন সরকারের কাছে এমন প্রতিশ্রুতি চায় ক্রেমলিন। তবে তা নাকচ করে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে ইউরোপের এ অঞ্চলে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা দেখছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ