বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে তিন যাত্রীকে মারধর ও এক শিশুকে বাসের জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর এই হামলা চালোনো হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বাসটির সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে তাদের এই মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
মারধরের শিকার মঠবাড়িয়ার শামীম সিকদার জানান, তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে বৌ কারিমা ও কারিমার সাত বছরের শিশু কন্যা মুনিয়াকে নিয়ে মঠবাড়িয়া যাওয়ার উদ্দেশে তারা ওই বাসে উঠেছিলেন। আগে বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়ার ভাড়া দেড়শ’ টাকা থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। শিশুসহ তারা চারজন ২৪০ টাকা করে টিকিট নিয়ে সিটে বসেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সিট খালি না রেখে বাসের সুপারভাইজার অতিরিক্ত যাত্রী তোতেল, যাদের দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়। এতে ঠাসাঠাসি হওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ টার্মিনালের ১৫-২০ জন শ্রমিক তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তার মা ও ভাগ্নে বৌ তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও মারধর করেন এবং শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে নিচে ছুড়ে ফেলে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। পরে তাদের চারজনকে না নিয়ে ঠাসাঠাসি অবস্থায় বাসটি যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এ ব্যাপারে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসনে শিপন জানান, যাত্রীদের সঙ্গে টার্মিনালে ওই বাসের শ্রমিকদের বাদানুবাদ হলেও মারধরের ঘটনা ঘটেছে টার্মিনালের বাইরে সড়কে। ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির আওতাভুক্ত শ্রমিকরা এই হামলা চালিয়েছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। বিষয়টি ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির নেতাদের জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম জানান, এক যাত্রীর পরিবারের চার সদস্যকে মারধরের ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশ থানা পুলিশকে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু তার আগেই বাসটি গন্তব্যে চলে যায়। শুক্রবার দুপুরে শামীম সিকদার নামে এক ব্যক্তি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগের তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম।
এদিকে রূপাতলী বাস টার্মিনালের একাধিক যাত্রী জানান, অভ্যন্তরীণ সব রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
যদিও বরিশাল জেলা প্রশাসন বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ