সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষ করে টুইটারে মাঝেমাঝেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁচা দিয়ে থাকেন দেশটির বর্ষীয়ান কংগ্রেসনেতা পি চিদাম্বরম। পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিতর্ককে আরও একবার উস্কে দিয়ে রবিবার (৩০ জানুয়ারী) ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্ণ হওয়ার বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে আসা বার্তা নিয়ে কটাক্ষ করে টুইট করেছেন তিনি ।
টুইটে তিনি লিখেছেন, 'ইসরায়েলকে জিজ্ঞাসা করার এটাই সেরা সময় যে তাদের কাছে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের কোনো উন্নত সংস্করণ আছে কিনা।' সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসে পেগসাস নিয়ে নতুন করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে দাবি করা হয়- ইসরায়েলের কাছ থেকে পেগসাস কিনেছিল ভারত। এরপরই পি চিদাম্বরম মোদিকে কটাক্ষ করে টুইটটি করেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ভারত-ইসরায়েল সম্পর্ক নিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, দুইদেশের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য এর চেয়ে ভাল সময় হতে পারে না। মোদি একটি বিশেষ ভিডিওয়ের মাধ্যমে ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ এই বার্তা দেন। তিনি ভিডিওটিতে বলেন, আমাদের দুই-দেশের সম্পর্কের ইতিহাস অনেক পুরনো। ভারত ও ইসরায়েলের মানুষের মধ্যে কয়েক শতাব্দী ধরে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ হিসাবে ভারত ইসরায়েলের কাছ থেকে পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনেছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হওয়ার পর মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করেছে কংগ্রেস। বিজেপির বিরুদ্ধে দেশ, সংসদ, সুপ্রিম কোর্টকে প্রতারণা করা এবং গণতন্ত্রকে হাইজ্যাক করার এবং প্রতারণার অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আগামী সপ্তাহে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করতে চায় এবং সংসদে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সরকারের কাছে জবাব দাবি করবে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০১৭ সালে ইসরায়েল সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অস্ত্র ও গোয়েন্দা নজরদারি কাজের সরঞ্জাম ক্রয়ে দুই শ কোটি ডলারের চুক্তি করেছিলেন। ওই চুক্তিতে ইসরায়েলি কম্পানি এনএসও’র আড়িপাতা যন্ত্র (স্পাইওয়্যার) পেগাসাসের কথাও ছিল। উল্লেখ্য, ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ইসরায়েল সফর ছিল সেটি। পরবর্তী সময়ে দুইদেশের সম্পর্কও নতুন দিকে মোড় নেয়। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে ফিলিস্তিনের মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষক মর্যাদার বিরুদ্ধে ভোট দেয় ভারত।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন প্রকাশের পরই ভারতের বিরোধী দলগুলো সোচ্চার হয়। শনিবারই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ করেন। চিদাম্বরম টুইটারে আরও লেখেন, শেষ চুক্তিটি দুই শ কোটি ডলারের ছিল। ভারত আরো ভালো কাজ করতে পারে। ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে যদি আমরা আরো ভালো নজরদারি চালানোর যন্ত্র পাই, তাহলে চারশ কোটি ডলারও দিতে পারি।
ভি.কে সিংকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি সন্দেহ করি যে, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি ও পেন্টাগণ পেপারস কাণ্ডে দুটি সংবাদমাধ্যমের (ওয়াশিংটন পোস্ট ও নিউইয়র্ক টাইমস) ভূমিকা সম্পর্কে তিনি জানেন কি না। যদি তিনি ইতিহাস না পড়তে চান তবে অন্তত সিনেমা দেখে নিতে পারেন।
বিডি-প্রতিদিন/ এ এস টি