একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করার জন্য আগামী রবিবার আদেশ দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদনটি দায়ের করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা।
এদিকে, রিভিউ আবেদন বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, রিভিউ আবেদন দাখিল হওয়ায় আপাতত কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা স্থগিত থাকবে।
অন্যদিকে এক সাংবাদ সম্মেলনে কামারুজ্জামানের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে ৪৪টি যুক্তি আনা হয়েছে। মূল ৪৫ পৃষ্ঠার আবেদনে মোট ৭০৪ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট দাখিল করা হয়েছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘রিভিউ শুনানীর ক্ষেত্রে যেন তাড়াহুড়া না করা হয় এবং আসামীপক্ষকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়। আমরা আশা করি, আদালত সে সুযোগ দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, কামারুজ্জামানের সাক্ষ্য প্রমাণের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। সেগুলো সঠিকভাবে বিবেচনা করে তিনি খালাস পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন এ সিনিয়র আইনজীবী।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চারজন বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে সর্বমোট ৫৭৭ পৃষ্ঠার রায়ের কপি প্রকাশ করা হয়। ওই দিন রাতে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিসহ লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায় ট্রাইব্যুনাল কর্তপক্ষ। ওই দিনই কামারুজ্জামানকে মৃত্যদণ্ড বহাল রেখে দেওয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সে অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে রিভিউ আবেদন করলেন কামারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ নভেম্বর বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ মার্চ, ২০১৫/মাহবুব