বাংলাদেশে তিন দিনের সফর শেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ধীরে ধীরে উজান থেকে আরও পানি আসছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নিবার্হী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, ''হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে শুক্রবার সকালে ২ হাজার কিউসেক ছাড়িয়ে গেছে। এতে আমরাও অনেকটা আশার আলো দেখছি।''
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসেন। তার এই সফরের আগে তিস্তা নদীতে উজানের পানি প্রবাহ কিছুই ছিল না। যে টুকু উজানের চুয়ানো পানি এসেছে তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট আটকিয়ে সেই পানি সেচ খালে সরবারহ করে সংশ্লিষ্টরা। ফলে ওই টুকু পানি দিয়ে ২১ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৯ শত হেক্টর বোরো জমিতে পানি দেয়া সম্ভব হচ্ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় যে পরিমান পানি এসেছে তা দিয়ে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া যাবে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, গত এক মাসে সর্ব সাকুল্যে তিস্তাতে পানি পাওয়া যায় ১ ফেব্রুয়ারি ৪ শত ৮৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ৭ শত ৭৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ১১ শত ৫৫ এবং সর্বশেষ ৬ মার্চ পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেজের মূল গেটের পানি প্রবাহ হয়েছে ২ হাজার ৬ শত কিউসেক।
তিস্তাপাড়ের বসবাসরত পরিবারগুলো জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফরের আগে পর্যন্ত তিস্তায় পানি কমতে কমতে ৪ শত কিউসেকে নেমেছিল। চুয়ানো পানির সরু নালায় পরিনত হয়েছিল তিস্তা। ফলে যতদূর চোখ যায় শুধু ধু-ধু বালুচর। এতে নদীর পানির অভাবে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকার কৃষকরা সেচ থেকে বঞ্চিত হয়। বন্ধ হয়ে পড়েছিল নৌকা চলাচল। তবে মমতা সফর শেষে ফিরে যাওয়ার পর উজান থেকে ধীরে ধীরে বেশ পানির প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে।
চরের মানুষেরা জানিয়েছে, নদীতে কিছুটা পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের উৎপাদিত জমির ফসলসহ নিজেরাও নৌকা চালিয়ে নদী পারাপার করতে পারছেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ মার্চ, ২০১৫/মাহবুব