দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে জনবহুল বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ প্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন, খরা, শৈত্যপ্রবাহ, অগ্নিকাণ্ড, বজ্রপাত এবং ভূমিধস আমাদের অতি পরিচিত দুর্যোগ। তাছাড়া সিসমিক জোনে অবস্থানের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা থেকেও আমরা ঝুঁকিমুক্ত নই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার পূর্বাভাস দেয়ার উপায় এখনো বের হয়নি। বড় ধরনের ভূমিকম্পে ক্ষয়-ক্ষতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তা বলা মুশকিল, তবে জনসচেতনতা ও পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলা করে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে।
আজ রবিবার ঢাকায় বাবুবাজারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২১ উপলক্ষে "ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডে করণীয়" বিষয়ক সচেতনতামূলক মহড়ায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার সেন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মানুষ বাড়ার পাশাপাশি আবাসিক-অনাবাসিক স্থাপনা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু এসব স্থাপনা কতটা মানসম্পন্ন, বড় ধরনের ভূমিকম্পে সেগুলো টিকে থাকবে কিনা এই আশঙ্কা প্রবল। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গাও নেই আমাদের বড় শহরগুলোতে। অভিযোগ রয়েছে দেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয় না। ফলে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আর বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। তাই ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের স্থাপনা দুর্যোগ মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে। এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত