বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয়ে গেছে চার বারের এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন জাপানের। প্রায় ৯ হাজার ফুটবলপ্রেমী রাজধানী টোকিওতে নীল রংয়ের জার্সি পরে রাজসিক বিদায় জানিয়েছেন 'ব্লু সামরাই'দের গতকাল। ব্রাজিলে পেঁৗছানোর আগে আত্দবিশ্বাসের পারদটাকে বাড়িয়ে নিতে জাপান তিন-তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে সাইপ্রাস, জাম্বিয়া ও কোস্টারিকার বিপক্ষে। প্রস্তুতি ম্যাচগুলো খেলেই শিনজি কাগাওয়ারা পা রাখবেন ব্রাজিলে।
'সূর্যোদয়ের দেশ' জাপান প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৮ সালে। এরপর থেকে টানা খেলে আসছে 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' বিশ্বকাপে। ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ আয়োজক ছিল বিশ্বের সবচেয়ে রাজকীয় ফুটবল আসরের। আগের চার আসরে মাত্র দুইবার প্রথম রাউন্ডের ব্যারিয়ার টপকেছিল জাপান। ২০১০ সালে প্যারাগুয়ের সঙ্গে টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা হয়নি। কিন্তু এবার সেরা আট। কোয়ার্টার ফাইনালের টার্গেটেই দেশ ছেড়েছে জাপান। দেশ ছাড়ার আগে ফুটবলারদের সামনে রেখে দেশবাসীকে জাপান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কুনিয়া দাইনি জানিয়েছেন, আগের বিশ্বকাপগুলো থেকে ভালো করাই টার্গেট দলের, 'বিশ্বকাপের খেলাগুলো খুব সহজ নয়। তারপরও আমাদের চাওয়া পাওয়া খুব বেশি নয়। আগের বিশ্বকাপগুলোতে যা খেলেছি. তারচেয়ে ভালো করাই আমাদের লক্ষ্য।' ভালো করার টার্গেটই হচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনাল। বিশ্বকাপের এবারের আসরে সূর্যোদয়ের দেশ খেলবে 'সি' গ্রুপে। আসরে জাপানের প্রথম ম্যাচ ১৪ জুন, প্রতিপক্ষ দিদিয়ের দ্রগবার আইভরি কোস্ট। ১৯ জুন গ্রিস এবং ২৪ জুন গ্রুপের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ রাদামেল ফ্যালকাওয়ের কলম্বিয়া। কাল দেশ ছাড়ার আগে দুই তারকা ফুটবলার শিনজি কাগাওয়া ও কেইসুকি হোন্ডাদের তীব্র করতালি দিয়ে বরণ করেন ফুটবলপ্রেমীরা। দর্শকদের উদ্দেশ্যে রক্ষণভাগের ফুটবলার মায়া ইয়োশিদা বলেন, 'আমার সব সময়কার স্বপ্ন বিশ্বকাপ জেতা।' পরক্ষণেই বলেন, 'আমার স্বপ্ন আসলে বিশ্বকাপে একটি জয়।' ফুটবলারদের বিদায় জানানোর অনুষ্ঠানে সমর্থকরা বহন করছিল 'ড্রিমস ইনটু পাওয়ার' নামে ব্যানার।
স্বাগতিক ব্রাজিলের পর বিশ্বকাপে সবার আগে জায়গা চূড়ান্ত করে নেয় জাপান। ১৯৯৮ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ অভিযানে আর্জেন্টিনা, ক্রোয়েশিয়া ও জ্যামাইকার কাছে হেরেছিল জ্যাকারোনির দল। ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত কোচ জ্যাকারোনি দলের দায়িত্ব নেন ২০১০ সালের বিশ্বকাপের পর। তার কোচিংয়ে এশিয়ান কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয় জাপান। ২০০২ সালে স্বাগতিক হয়ে প্রথম ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র করে বেলজিয়ামের সঙ্গে। পরের ম্যাচে রাশিয়াকে ১-০ ও তিউনেশিয়াকে হারায় ২-০ গোলে। নক আউট পর্বে ১-০ গোলে হেরে যায় তুরস্কের কাছে। ২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্বকাপে প্রথম পর্বের বেড়া ডিঙ্গাতে পারেনি জাপান। অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিলের কাছে হারলেও ড্র করে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে। ২০১০ সালে ক্যামেরুনকে ১-০, ডেনমার্ককে ৩-১ গোলে হারায়। ১-০ গোলে হেরে যায় জাপানের কাছে। নক আউট পর্বে প্যারাগুয়ের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করার পর হেরে যায় টাইব্রেকারে।