ক্রীড়াঙ্গন জুড়ে একটাই আলোচনা। ইস্ পারল না বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনালে বাংলাদেশ হেরে গেছে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২৩ দল। ফুটবলে বাংলাদেশের অনেক হারে দর্শকরা ধিক্কার দিয়েছেন। কিন্তু রবিবার ফাইনালে হারার পর শুধু মামুনুলরা কাঁদেননি। কেঁদেছে পুরো দেশ। এমন কান্নায় গর্বও আছে। আসলে এমন হারে বেদনায় ভেঙে পড়েছে পুরো দেশ। কিন্তু ফুটবলারদের কেউ দোষ দেননি, বরং বাহবা পেয়েছেন মামুনুল-এমিলিরা। সত্যি কথা বলতে কি ফুটবল যেন খেলতেই ভুলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারছিল না। সব টুর্নামেন্টে শুধুই ভরাডুবি। আক্ষেপ করে বলা হচ্ছিল ফুটবল বেঁচে আছে লাইফ সাপোর্টে।
না, ফুটবল যে বাংলাদেশ ভুলে যায়নি তা এবার বঙ্গবন্ধু কাপে প্রমাণ দিয়েছেন মামুনুলরা। ৭০ ও ৮০ দশকে কায়সার, মুন্না, সাব্বির, আসলাম, রুমি ও কাননরা অসাধারণ ফুটবল খেলতেন। এতটা মনোমুঙ্কর পারফরম্যান্স ছিল যে ইরানের পিরুজি ক্লাবকে হারিয়ে দিয়েছিল ঢাকা মোহামেডান। সেই গতিময় ও ছন্দময় খেলা উপহার দিয়েছেন মামুনুলরা। আসলাম বলতে বাধ্য হয়েছেন এত গতির খেলা তারাও খেলতে পারেননি। কথা হচ্ছে এতই যদি ভালো খেলে তাহলে ফাইনালে হারল কেন? এই প্রশ্নটাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রথমার্ধে ২ গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত খেলা দিয়ে সমতায় ফিরে এসেছিল। যে আক্রমণ তাতে বাংলাদেশ জিতেই যেতে পারত। কিন্তু শেষ মিনিটের গোলে বাংলাদেশকে দুঃখজনকভাবে হেরে যেতে হয়। এই গোলের পেছনে অনেক গোলরক্ষক শহিদুল আলমকে দায়ী করেছেন। তিনি পোষ্ট ছেড়ে এগিয়ে না আসলে গোল নাও হতে পারত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেনাল্টি সেভ্ করে নায়ক বনে যান। কিন্তু ফাইনালে এমন ভুল করলেন কেন? এর জন্য কি তিনি একাই দায়ী। দলে গোলরক্ষকের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন পনির। তিনি কি শহিদুলকে শেখাননি কখন পোষ্টে থাকতে হয় বা বের হয়ে আসতে হয়। ক্রুইফের দায়িত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু সবাই বলছেন দলে যোগ্য গোলরক্ষক প্রশিক্ষকের দরকার আছে। বাংলাদেশে অনেক বিখ্যাত গোলরক্ষক আছেন এ ক্ষেত্রে তাদের কাজে লাগানো যেতে পারে। হেরেছে কিন্তু প্রমাণ দিয়েছে ফুটবল এখনো বেঁচে আছে। বাফুফেকে এখন এই জোয়ার ধরে রাখতে হবে। তা না হলে ফুটবলে দুর্দশা নেমে আসতে সময়ও নেবে না।