আমি প্রত্যাশা করি না এবারের বিশ্বকাপে নতুন বলে স্পিনাররাই প্রধান ভূমিকা পালন করুক। তার মানে এই নয় যে, আমি স্পিনারদের ছোট করে দেখছি। একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখন স্পিন। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯২ বিশ্বকাপে স্পিনাররা বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। পাকিস্তানের লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন। তার সামনে ছিল কেবলমাত্র তার স্বদেশী পেসার ওয়াসিম আকরাম। এবারের বিশ্বকাপেও স্পিনাররা দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে আমি মজা করেই বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্য থেকে ১১ জন স্পিনারকে নিয়ে তালিকা করেছি, যারা এই আসরে ভালো করতে পারেন। যদিও নিশ্চিত করে বলা ঠিক হবে না যে, এই তালিকার স্পিনাররাই শুধু ভালো করবেন, এ ছাড়া ইংল্যান্ডের মঈন আলী, আয়ারল্যান্ডের পল স্টারলিং কিংবা শ্রীলঙ্কার রঙ্গনা হেরাথ ভালো করতে পারেন। তবে আমার দৃষ্টিতে ১১ জন নিয়েই আমি তালিকা করেছি।
১. সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) : তাকে খুব বড় স্পিনার আমি বলব না, তবে নিঃসন্দেহে একজন স্মার্ট বোলার। বিগ ব্যাশে খেলায় তার কন্ডিশনের সঙ্গে পরিচয়ও হয়েছে আগেই। সে কারণে বিশ্বকাপে ভালো করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সাকিব খুব শান্ত বোলার, তবে উইকেট শিকারী বোলার অবশ্যই। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণে তিনি ভয়ঙ্কর। দলের যখন প্রয়োজন সে সময় তিনি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকেন। যদি প্রতিপক্ষ কোনো দল সাকিবকে খেলতে পারে ঠিকমতো তাহলে দলের অন্য বোলারদের বিরুদ্ধে ঠিকই ভালো করবে এবং বড় স্কোর করতে কোনো সমস্যা হবে না। সাকিব সবসময়ই ভয়ঙ্কর।
২. রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত) : অন্য বোলারদের কথা চিন্তা করলে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে এগিয়ে রাখতে হবে অশ্বিনকেই। গতিবিধি বুঝে হঠাৎ করে বাউন্স দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানিয়ে ফেলেন। তবে পাওয়ার প্লেতে তার বোলিং খুবই কার্যকরী।
৩. রবিন্দ্র জাদেজা (ভারত) : ২০১৩ সালে ভারত যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় করেছে সেখানে বড় ভূমিকা ছিল জাদেজার। ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা বুঝে বোলিং করেন তিনি। সে কারণে সফলও হন। বিশ্বকাপেও দৃষ্টি থাকবে তার দিকে।
৪. ড্যানিয়েল ভেট্টরি (নিউজিল্যান্ড) : তার মধ্যে সব গুণই আছে। অভিজ্ঞতা কিংবা টেম্পারমেন্ট সবই তার মধ্যে আছে। তা ছাড়া ঘরের মাঠে খেলা বলে বাড়তি সুবিধা তো পাবেনই। তার বোলিংয়ের লাইন-লেন্থ খুবই চমৎকার। যে কোনো সময় তিনি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারেন।
৫. ইয়াসির শাহ (পাকিস্তান) : খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন, '৯২-এ যেমনটা করেছিলেন মুশতাক আহমেদ। এই আসরে এমনিতেই ভালো মানের লেগ স্পিনার নেই। তাই চমক দেখাতে পারেন ইয়াসির। তার অতিরিক্ত বাউন্স দেওয়া ডেলিভারিগুলো দেখার মতো।
৬. শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান) : তার সামর্থ্য এবং সক্ষমতা দুর্দান্ত। ইয়াসির শাহর সঙ্গে জুটি গড়লে যে কোনো দলের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন।
৭. সচিত্রা সেনানায়েকে (শ্রীলঙ্কা) : যদি কন্ডিশনের সঙ্গে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারেন, তবে তার বাউন্স যে কোনো ব্যাটসম্যানের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
৮. ইমরান তাহির (দক্ষিণ আফ্রিকা) : সবসময় দক্ষিণ আফ্রিকার পেস উইকেটে বোলিং করায় তার জন্য অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন খুবই সহায়ক হবে। তার স্ট্রাইকরেট চমৎকার।
৯. মোহাম্মদ নবী (আফগানিস্তান) : বোলিংয়ে আফগানদের প্রধান ভরসা পেসে। কিন্তু অধিনায়ক নবীও স্পিন বোলিং করে থাকেন।
১০. সামিউল্লাহ সেনওয়ারি (আফগানিস্তান): নবীর সঙ্গে জুটি গড়তে পারলে যে কোনো দলের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন সামিউল্লাহ। তার লেগ স্পিন আফগানদের জন্য খুবই কার্যকরী।
১১. জর্জ ডকরেল (আয়ারল্যান্ড) : বয়স মাত্র ২২। তারপরও অভিজ্ঞতা চমৎকার। গত টি-২০ বিশ্বকাপে দারুণ বোলিং করেছেন তিনি। এবারও আইরিশদের স্পিনের প্রধান ভরসা ডকরেল।