ফুটবলে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ এক জয়ে। ১৯৭২ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচ খেলে। তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে জাকারিয়ার পিন্টুর নেতৃত্বে ঢাকা একাদশ মুখোমুখি হয়েছিল ভারতের বিখ্যাত ক্লাব মোহনবাগানের বিপক্ষে। কাজী সালাউদ্দিনের অসাধারণ এক গোলে জয় পেয়েছিল ঢাকা একাদশ। ১৯৭৩ সালেই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মারদেকা কাপে খেলার সুযোগ আসে বাংলাদেশের। এটিই ছিল বিদেশে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তারপর থাইল্যান্ডে কিংস কাপ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট কাপসহ অনেক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে। ১৯৮৪ সাল থেকে সাফ গেমসও খেলছে। কিন্তু কোনো আসরে সাফল্য আসেনি।
ফুটবল ইতিহাসে প্রথম সাফল্যের মুখ দেখে ১৯৮৯ সালে। ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ লাল দল। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ড্র থাকায় টাইব্রেকারে জয় পেয়ে শিরোপার উৎসবে মেতে উঠে লাল দল। লাল দল মূলত জাতীয় দল হলেও সেবার বাংলাদেশের সবুজ নামে আরেকটি দল অংশ নেয় বলে জাতীয় দল নামে খেলেননি কায়সার হামিদরা। দলে মূলত অধিনায়ক ছিলেন ছাইদ হাছান কানন। কিন্তু সেমিফাইনালে তিনি আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করলে ফাইনাল খেলা হয়নি। তার বদলে গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন সেলিম। দলকে নেতৃত্ব দেন কায়সার হামিদ। ১৯৯৫ সালে জাতীয় দল মিয়ানমারে চার জাতি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন মোনেম মুন্না। সাফ গেমসে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও অবশেষে ১৯৯৯ সালে সাফল্যের মুখ দেখে বাংলাদেশ। ফাইনালে আলফাজের গোলে নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবার স্বর্ণ জিতে। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন জুয়েল রানা। ২০০৩ সালে রজনীকান্ত বর্মনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনালে প্রতিপক্ষ দল ছিল মালদ্বীপ। শেষ শিরোপাটা আসে ২০১০ সালে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে আফগানিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। দলকে নেতৃত্ব দেন গোলরক্ষক আমিনুল হক। আজ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে মামুনুলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলছে। প্রথম বারের মতো ফাইনালে উঠে দেশকে মামুনুলরা শিরোপা উপহার দিতে পারেন কিনা সেটাই আজ দেখার বিষয়।