চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের জরুরি চিকিৎসায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) না থাকায় আতঙ্ক ভর করেছিল সবার মধ্যে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ফলে সরকার গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভেন্টিলেটরসহ ১০ শয্যার একটি আইসিইউ ওয়ার্ড বরাদ্দ করে। নানা প্রক্রিয়া শেষে এটি এখন প্রস্তুত।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জরুরি চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। সরকারিভাবে চট্টগ্রামে এটিই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রথম আইসিইউ সেবা।
জানা যায়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া দুইজন রোগী মারা যান। তখন রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেছিলেন, আইসিইউ শয্যার অভাবেই তাদের মৃত্যু হয়। সংকটময় মুহূর্তে তাদের আইসিইউ সেবা দেওয়া গেলে হয়তো শেষ চেষ্টাটা করা যেত। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন। কারণ চট্টগ্রামে বর্তমানে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের (বিআইটিআইডি) ৩০ শয্যা এবং জেনারেল হাসপাতালের ১০০ শয্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনোটিতেই আইসিইউ সেবা নেই। ফলে শঙ্কা আতঙ্ক ও সংশয় বাড়ে সবার মাঝে।
চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক স্বাচিপের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরসহ ১০টি আইসিইউ শয্যা চালু হচ্ছে। এটি চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখবর। কঠিন এই সময়ে এটি একটি উৎকৃষ্ট উদ্যোগ। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ৮টি শয্যাও চালু করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। আশা করি এগুলোও চালু করা হবে।’
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসিম কুমার নাথ বলেন, ‘জেনারেল হাসপাতালে চালু করা হবে ১০ শয্যার আইসিইউ সেবা। আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি শেষ। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে এ ইউনিটে সেবা দেওয়া যাবে। এখন চট্টগ্রামে করোনা রোগীর আর আইসিইউ সংকট থাকবে না।’
জানা যায়, চট্টগ্রামে গত ২৬ মার্চ থেকে বিআইটিআইডি ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিদিনই নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনান্ত হচ্ছে। ফলে বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে আইসিইউ সেবার। তাছাড়া চট্টগ্রামে এক শিশু, দুই বৃদ্ধ ও দুই নারীসহ মোট পাঁচজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এবং ৩৯ আক্রান্ত থাকায় সবার মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। তবে বর্তমানে আক্রান্তরা বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল