রাতে সুনসান নীরবতা। সবাই ফিরে যান আপন নীড়ে। কিন্তু ভাসমান-ছিন্নমূল মানুষ! যাদের যাওয়ার এতটুকু আশ্রয় নেই, নেই মাথা গুজাবার ঠাঁই। ঝড়-বৃষ্টি রোদকে সঙ্গী করেই যাদের দিন পার। রাতের আঁধারই যাদের সঙ্গী। খোলা আকাশের মুক্ত আঙিনাই যাদের আশ্রয়স্থল। সাধারণ সময়ে মানুষের সহানুভূতি এবং আশপাশের হোটেল রেঁস্তোরা থেকে দু’মুঠো অন্ন জুটে তাদের। কিন্তু করোনাভাইরাসের এই কঠিন সময়ে তাদের মুখে দু’মুঠো অন্ন জোটা অনেকটা অমাবস্যার চাঁদের মত। তবে এমন ভাসমান, ছিন্নমূল, কর্মহীন দিনমজুর এবং ঠিকানাবিহীন মানুষে মুখে মধ্যরাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা জাহান উপমা।
জানা যায়, কিছু মানবিক মানুষের সহায়তায় ইউএনও’র উদ্যোগে ভাসমান কর্মহীন এবং ঠিকানাবিহীন মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার হচ্ছে। গত ১৪ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন ৫০ জন করে প্রায় ৫০০ মানুষকে খাবার দেওয়া হয়। এ জন্য পটিয়ার রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্ম, থানার মোড়, ইন্দ্রপুল এলাকা, পোস্ট অফিস মোড়, ডাকবাংলো, বাসস্ট্যান্ড ও বড় বড় জংশনসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে খাবার দেয়া হচ্ছে। এ কাজে ইউএনও’র সঙ্গে আছেন একদল স্বেচ্ছাসেবী।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা বলেন, একদিন রাত ১০টার দিকে স্টেশন রোডে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণে প্রচারণায় যাই। সেখানে দেখি অন্ধকারে ৩-৪ জন বয়স্ক মানুষ বসা। জিজ্ঞেস করলাম, বাবা আপনারা এখানে কি করেন। বললেন, তারা দিনমজুর। স্টেশনেই থাকেন। এমনিতে হোটেলে খেলেও এখন বন্ধ, তাই চিড়া-মুড়ি দিয়ে দিন কাটান। তাছাড়া কাজ না থাকায় আয়ও বন্ধ। তখন থেকেই আমরা প্রতিদিন রাতের আধারে বের হয়ে এসব অভুক্ত অসহায় মানুষদের খাবার বিতরণ করছি।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল