শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াকে শরীরে পানি জমা হওয়া, পানি আসা বা শরীর ফুলে যাওয়া বলা হয়। এটা কোনো রোগ নয় বরং অনেক শারীরিক অবস্থা এবং অনেক জটিল রোগের লক্ষণ হিসেবে এ অবস্থাকে বিবেচনা করা হয়। শরীরে পানি জমা হলে অনেক ধরনের উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ধীরে ধীরে শরীরে পানি জমতে থাকে যার ফলে উপসর্গগুলোও ধীরে ধীরে শরীরে প্রকট আকার ধারণ করতে থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ কারণ : ১. একই অবস্থায় অনেক সময় ধরে বসে থাকা অথবা দাঁড়িয়ে থাকা। ২. খুব বেশি লবণজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা। ৩. অনেক মেয়ের মাসিকের পূর্ববর্তী সময়ে। ৪. গর্ভাবস্থায়। ৫. রক্তশূন্যতা। ৬. অপুষ্টি।
বিভিন্ন ওষুধ গ্রহণের ফলশ্রুতিতে : ১. ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার। ২. বাত ব্যথার ওষুধ। ৩. ইসট্রোজেন জাতীয় হরমোন। ৪. কিছু কিছু উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ। ৫. কিছু ডায়াবেটিক রোগের ওষুধ। অনেক জটিল রোগের উপসর্গ হিসেবে শরীর ফুলে যেতে পারে-
হার্ট ফেইলুর : এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মারাত্দক কারণ এবং অধিকাংশ রোগীর এ কারণে শরীর ফুলে যায়। যখন শারীরিক প্রয়োজনমাফিক রক্ত সঞ্চালন করতে হার্ট ব্যর্থ হয় তাকে হার্ট ফেইলুর বলে। এতে হার্ট দুর্বল হওয়ায়, প্রয়োজনমাফিক হার্ট রক্ত সরবরাহ করতে না পারার কারণে ঘটে থাকে। ব্যক্তি খুবই দুর্বলতা অনুভব করবে।
লিভার সিরোসিস : লিভার আংশিকভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে এ রোগ হয়ে থাকে। লিভারের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় রক্তে এলবুমিন ও অন্য আমিষজাতীয় পদার্থের ঘাটতি দেখা দেয়, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং পরিপাকতন্ত্রের রক্তনালিতে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, এই তিনের সমন্বয়ে পেটে এবং শরীরে পানি জমা হয়ে থাকে।
কিডনি ডিজিজ : কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ায় রক্তে লবণ পানির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পানি জমতে পারে।
লেখক : সিনিয়র কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।