মুশফিকের পাস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের হালকা টোকায় গোল করেন নাসির হোসেন। তারপর বুনো উল্লাস। ঠিক উইকেট পাওয়ার পর যেমনটা করে থাকেন। এদিকে মুশফিক-নাসিরের উল্লাস দেখে বিরক্তিতে মাটিতে হাত চাপড়াতে থাকেন সাকিব আল হাসান। গোল হজম করলে কি আর ভালো লাগে! অবশ্য শেষ মুহূর্তে সাকিবের দলও গোল পরিশোধ করে নিয়ে মেতে ওঠেন উল্লাসে। গতকাল ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলাও বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় ফুটবল নিয়েই মেতে উঠেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
সকালের ঝিরিঝিরি বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় সবার মনেই ছিল স্বস্তি। একদিকে গ্রাউন্ডসম্যানরা মাঠ প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত অন্যদিকে ওয়ার্মআপ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দুই দলের ক্রিকেটাররা। ম্যাচ শুরুর প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু বেলা ১২টায় হঠাৎ শুরু হয় ভারী বর্ষণ। ঘণ্টা খানেক পর বৃষ্টি থামলেও মাঠে পানি জমে যায়। মাঠের পরিস্থিতি দেখে দুপুর ১টা ৫মিনিটে দিনের খেলা পরিত্যক্ত করে দেন ম্যাচ রেফারি।
টানা তিন দিন বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হওয়ায় বিরক্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, 'পাঁচদিন মাঠে নামার পরিকল্পনা ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামার পর যদি টানা তিন দিন খেলা পরিত্যক্ত হয় তা স্বাভাবিকভাবেই বিরক্তকর।' ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন ব্যাটিং করে ব্যাকফুটেই চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তারপরেও বৃষ্টি কাম্য ছিল না বলে মনে করেন রিয়াদ। তিনি বলেন, 'আমরা খেলতে এসেছি। আমরা যদি খেলাটাই না খেলতে পারি তাহলে তো আর কিছুই হল না। ভালো না খারাপ খেলি সেটা পরের বিষয়। এই চেষ্টা তো আমাদের করতে হবে।'
বৃষ্টির কারণে খেলা না হওয়ায় হতাশ প্রোটিয়ারা। গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক ডেইন ভিলাস বলেন, 'এটা খুবই হতাশার। আমরা কয়েক দিন থেকে খেলার জন্যই মাঠে আসি। কিন্তু খেলা হয় না।'
চট্টগ্রাম টেস্টের মতো ঢাকা টেস্ট ড্র হয়ে গেলে বাংলাদেশের ছয় রেটিং পয়েন্ট বেড়ে যাবে। কিন্তু এভাবে বৃষ্টির সহায়তা ড্র করতে চান না টাইগাররা। এর চেয়ে খেলে হারলেও খুশি ক্রিকেটাররা। মাহমুদুল্লাহ বলেন, '৬ পয়েন্ট পাওয়ার থেকে খেলাটাই আমরা বেশি উপভোগ করতাম। আবহাওয়ার উপর তো আর কারও হাত নেই। পুরো পাঁচদিন যদি দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারতাম তাহলে প্রস্তুতিটা খুবই ভালোহত। আমরা হারি-জিতি যাই হত সেটা আমাদের কাজে দিত। কারণ আমরা বিশ্বের সেরা দলটির বিপক্ষে খেলতাম। এটা আমাদের জন্যে ইতিবাচক হত, ভালো হত। কারণ আমরা আমাদের স্কিলগুলোকে আরও ঝালিয়ে নিতে পারতাম।'
টানা তিন দিন বৃষ্টি হলেও ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন পুরো সময়ই খেলা হয়েছে। বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে করেছে ২৪৬ রান। উইকেটে সেট হয়েও ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। এ সম্পর্কে মাহমুদুল্লাহর ভাষ্য, 'প্রথম ২০-৩০ রান তোলা কঠিন। ওটা হার্ডেল পার্ট। তখন স্বাভাবিক খেলার সময়। তিন-চার জন আমরা ২০-৩০-৩৫-৪০ রান করে আউট হয়ে গেছি। আমার মনে হয়, টেস্ট ক্রিকেটে এটা একটা অপরাধ। আমাদের আলাপ করে বের করতে হবে কি সমস্যা হচ্ছে? যেন এখান থেকে আমরা বের হতে পারি। ইনশাল্লাহ আমরা দ্রুতই সমস্যার সমাধান করে ফেলব।'