জাতীয় দল ছেড়ে সহযোগী দেশের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার ঘটনা বিরল নয়। শেন জারগেনসন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেড কোচের দায়িত্ব ছেড়ে এখন ফিজির কোচ। জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে আবার ফিরে আসার ঘটনা রয়েছে। কিন্তু মূল দল ছেড়ে যুব দলের দায়িত্ব নেওয়ার ঘটনা নেই বললেই চলে। এমন কাজটিই করলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার স্টুয়ার্ট ল। এক সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেড কোচ ছিলেন। এরপর সরে দাঁড়ান। এখন আবার দায়িত্ব নিয়েছেন যুব দলের। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দায়িত্ব নিতে ২৪ আগস্ট ঢাকায় পা রাখছেন স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিংদের সতীর্থ স্টুয়ার্ট ল। ১৬ সপ্তাহের জন্য অসি ভদ্রলোকের হাতে বিসিবি দায়িত্ব তুলে দিয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে। আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যুব বিশ্বকাপের আসর বসছে বাংলাদেশে।
২০১১ সালের বিশ্বকাপের পর স্টুয়ার্ট ল হেড কোচের নিয়োগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। সাত মাস দায়িত্ব পালন করে পারিবারিক কারণে সরে দাঁড়ান। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ঘুরে দাঁড়ানোর পাইপ লাইনে উঠে দাঁড়িয়েছিল। সেই পারফরম্যান্সের কথা বিবেচনা করেই বিসিবি পুনরায় দায়িত্ব তুলে দেন ল'র হাতে। আগে ল কোচ গুরুজন ছিলেন মুশফিকদের। এবার গুরুজন মেহেদি হাসান মিরাজদের। যুবাদের কোচ বানানোর ব্যাখ্যায় বিসিবি পরিচালক ও ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, 'আমাদের কোচরা খুব ভালো করছেন। তারপরও মনে হয়েছে সাফল্য পেতে একজন বিদেশি কোচ প্রয়োজন। তাই স্টুয়ার্ট ল'কে নিয়েছি। সত্যি বলতে যুব বিশ্বকাপে আমাদের স্বপ্ন আকাশছোঁয়া।' যুবদল কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে এসেছে। সফরে ৫-২ ব্যবধানে হারায় স্বাগতিক যুবাদের। যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপেই খেলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাঠ বলেই আকাশছোঁয়া স্বপ্ন বাংলাদেশের। ২০০৪ সালে যুব বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার কাপ পর্বে খেলতে না পারার আক্ষেপ মিটিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্লেট পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ২০১২ সালে প্রথমবার কাপ পর্বে খেলে এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদরা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন। সেই সাফল্য উদ্দীপ্ত করছে বাংলাদেশকে। স্টুয়ার্ট ল'র হাত ধরে যাতে স্বপ্নের পারফরম্যান্স করতে পারে, সেই অপেক্ষা ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালি। ক্যারিয়ারে মিডল অর্ডারে ভ্যাটিং করতে স্টুয়ার্ট ল। বোলিং করতে ফাস্ট মিডিয়াম। ২০০৯ সালে সবাইকে অবাক করে অবসর নেন। এরপর শুরু করেন কোচিং। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর দায়িত্ব নেন বাংলাদেশের। সাত মাস পর চলে যান। বাংলাদেশের আগে ব্যাটিং কোচ ছিলেন শ্রীলঙ্কার। তার কোচিংয়েই ২০১২ সালে যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে অস্ট্রেলিয়া। তাই স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ।