বাংলাদেশের বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার প্রয়োজন মিটাতে গতানুগতিক কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা বর্তমানে প্রযুক্তি নির্ভরশীলতার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কৃষি কার্যক্রম যথা চাষাবাদ, পশুপালন, মৎস্য চাষ এবং আনুসাঙ্গিক প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়সমূহ উন্নত প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনায় এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ফলে সার্বিক কৃষিকর্ম বিভিন্ন অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত এবং কৃষি উৎপাদন ও ভোক্তার সাথে সামঞ্জস্যহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, জ্ঞানভিত্তিক খামার ব্যবস্থাপনার চরম ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই ঘাটতির ফলে কৃষির সার্বিক উন্নতি ও কৃষকের জীবনমান উন্নয়ণ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের ফলে চরম ভুগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এ অবস্থায়,দেশের জনসংখ্যাকে জনবলে উন্নীত করতে আইইউবিএটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।কৃষির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বেসরকারি পর্যায়ে সর্বপ্রথম কৃষিতে বিএসএজি (অনার্স)কোর্স চালু করে। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে, কৃষক এবং কৃষি কর্মের সহায়ক আধুনিক ও প্রয়োগিক শিক্ষার সম্প্রসারণের স্বার্থে আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা লগ্ন থেকেই কলেজ অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস'র কার্যক্রম শুরু হয়।
বর্তমান বিজ্ঞানের যুগোপযোগী উন্নয়নের সাথে আধুনিক প্রযুক্তি আর প্রায়োগিক ধারণার প্রেক্ষাপটে, কৃষিতত্ত্ব-ভিত্তিক উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগের সার্বিক কলা কৌশলের উপরে দেশের কারিগরি দক্ষ জনশক্তির চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং পরিশ্রমী কৃষি গ্রেজুয়েট বের করা হয়। চার বছরে সর্বোমোট বারোটি শিক্ষা সেমিষ্টারে ১৬৬ ক্রেডিট-আওয়ার(একটি প্রেক্টিকাম সেমিষ্টারসহ) কৃষিবিজ্ঞান কার্যক্রমের বাস্তবায়নে শিক্ষা দান করা হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এবং ডেমোনস্ট্রেশন ফিল্ডে প্রাপ্ত সকল সুবিধায় কলেজের পিএইচডি ডিগ্রিধারী সকল শিক্ষক তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের হাতে কলমে শিক্ষাদান করেন।
একই সাথে শিক্ষকগণ কৃষি প্রযুক্তির উদ্ভাবন, উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকেন।সেমিনার, কর্মশালা এবং মেলার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের মাঝে শস্য, খাদ্য সামগ্রী ও প্রযুক্তির ধারনা দেয়া হয়। প্রফেসর ড. এএম ফারুক টমোলু উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যার ফলে একটি গাছে আলু ও টমোটো উৎপাদন করা সম্ভব ।
বান্দরবন জেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে ১০০ একর জমিতে পাহাড়ী চাষ প্রকল্প এবং জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ৫.৬ একর জমিতে রাবেয়া এন্ড রশিদ মিয়া মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে এগ্রো-ট্যুরিজম এবং চর উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অদূর ভবিষতে ডিভিএম ও পশুপালন বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ চালু করা হবে । এছাড়া স্নাতকোত্তর কৃষি (এগ্রোনমি ও হর্টিকালচার) প্রোগ্রাম চালু করা হবে ।
এছাড়াও দেশের কৃষি কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের স্বার্থে সকল স্তরের কৃষক ও সুবিধাভোগীগণ যাতে সহজে কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগের সহায়তা পেতে পারেন তা বিবেচনায় রেখে কলেজ অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস- এর অধীনে ‘আইইউবিএটি এগ্রিকালচারাল এডভাইজারী সার্ভিসেস’ বা ‘আইএএএস’ নামক সেবা কার্যক্রম চালু আছে। এই সেবার মাধ্যমে কৃষকগণ খুব সহজেই তাদের প্রয়োজন মত কৃষি সেবা কিংবা পরামর্শ নিতে পারেন।
আইইউবিএটির গ্র্যাজুয়েট কৃষি ক্যাডার পরীক্ষার মাধ্যমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে কর্মরত আছেন, এছাড়াও কৃষি বিষয়ক গবেষণা ইনস্টিটিউট,ব্যাংকসহ সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।আইইউবিএটি বিএসএজি গ্রাজুয়েটরা কৃষি বিষয়ে এমএসসি ও পিএইচডি তে উচ্চ শিক্ষায় দেশে এবং বিদেশে অধ্যায়নরত আছে ।বর্তমানে কৃষি অনুষদে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৭০ এর অধিক এবং আইইউবিএটি বিএসএজি গ্রাজুয়েট এর সংখ্যা ৪৫০ এর অধিক
মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ দিচ্ছে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত গার্ডেন ক্যাম্পাস খ্যাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)। প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান বৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিনাখরচে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সামার ২০১৯ সেমিস্টারের জন্য আইইউবিএটির এই বৃত্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবেদন করার নিয়ম এবং এই বৃত্তির যাবতীয় তথ্য www.iubat.edu/FMS ঠিকানায় পাওয়া যাবে। ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি (বিজ্ঞান বিভাগ)/সমমান/কৃষি ডিপ্লোমা এবং নুন্যতম জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে ।
এছাড়াও এসএসসি এবং এইচএসসি এবং ডিপ্লোমা পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ১০০% পর্যন্ত মেধা বৃত্তি।আরো রয়েছে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় উৎসাহিত করতে ১৫% স্পেশাল বৃত্তি সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫৭ টি বৃত্তি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের আনা নেওয়ার জন্য ক্যাম্পাস থেকে সম্পূর্ন বিনা খরচে বাস চলাচল করে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা পর পর শার্টল সার্ভিসের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের আসে পাশের এলাকা হতে শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়া করে। আর ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, সাভার গাজীপুর এবং নারায়ণঞ্জ হতে প্রতিদিন সকাল ৭টায় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বাসগুলো ছেড়ে আসে এবং সন্ধ্যা ৫.৩০ ক্যাম্পাস থেকে নিদির্ষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর