শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পুলিশ প্রহরায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন বশেমুরবিপ্রবি'র ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অপসারণের এক দফা দাবিতে ১২ দিন যাবৎ লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার সকালে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আমাদের দুর্নীতিবাজ, অসভ্য, কুকর্মের অধিকারী ভিসিকে দ্রুত অপসারনে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন তিনি যেন দেশে ফিরেই দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ,অসৎ ও সমাজের শত্রু ভিসি নাসিরউদ্দিনের অপসারনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আহবান আমাদের নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর যারা নির্মম ও জঘন্য হামলা চালিয়ে আহত করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, ইউজিসি গঠিত তদন্ত টিম ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির প্রমান পেয়েছে বলে জানা গেছে এবং তদন্ত টিম ভিসির অপসারনের জন্য সুপারিশও করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার প্রফেসর ড. নুরউদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে জানান, ইউজিসি তদন্ত টিম ভিসির অপসারনের সুপারিশ করেছেন বিষয়টি তিনি টিভির স্ক্রলে দেখেছেন। অফিসিয়ালি কিছু জানেন না।
তিনি আরও জানান, যে ইউজিসির তদন্ত টিম তাদের তদন্ত রিপোর্ট ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেয়ার পর চেয়ারম্যান তদন্ত রিপোর্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর পর তারা মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অফিসিয়ালি জানতে পারবেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে ভিসি সাহেব তাকে ফোন করেন। তখন তিনি জরুরি অফিসিয়াল কাজে ঢাকা যাবেন বলে পুলিশ দিয়ে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বাইরে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে বাংলো থেকে বের করে আনার পর তিনি কোথায় গেছেন সেটা আমাদের জানা নেই।
তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রবিবার ইউজিসি ভিসিকে প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ দেয়ায় তিনি রাতে বাংলো ছেড়েছেন। এখন তার পদত্যাগ সময়ের ব্যাপার। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদেও আন্দোলনের গতি আরো বেড়ে গেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের এক দফার আন্দোলন অর্থাৎ ভিসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ডেইলী সান পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিস্কার করে। এর প্রেক্ষিতে ভিসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি এবং নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ