ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে এখনও নরেন্দ্র মোদিকেই তাদের প্রথম পছন্দ বলে জানিয়েছে দেশটির অধিকাংশ মানুষ। বার্ষিক ইন্ডিয়া টুডে'র ‘মুড অব দ্য নেশন’ (এমওটিএন)-এর একটি জরিপেই উঠে এসেছে এই তথ্য। সারা দেশজুড়ে যতগুলি মানুষের অভিমত নেওয়া হয়েছে তার ৫৩ শতাংশই বলছেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদে মোদিই যোগ্য ব্যক্তি। ২২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন এই পদে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীই আদর্শ।
স্বাধীন ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও মোদি এগিয়ে রয়েছেন। ২৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলছেন স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোদিই সেরা প্রধানমন্ত্রী, ২০ শতাংশ বলছেন ইন্দিরা গান্ধীই সেরা, ১০ শতাংশ মত দিয়েছেন অটল বিহারী বাজপেয়ীর পক্ষে। মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকেই স্বাধীন ভারতের সেরা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনে করেন।
তবে দেশটির প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দলের এই নেতাদের পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকেও কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাইছেন, যে সংখ্যাটা মাত্র ৪ শতাংশ। তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান ৩ শতাংশ মানুষ, ২ শতাংশ উত্তরদাতারা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চাইছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি, সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম, আপ নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, সমাজবাদী পার্টি(এসপি)-র নেতা অখিলেশ যাদবকে। আর ১ শতাংশ চাইছেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র প্রধান মায়াবতীকে।
এমওটিএন’এর ওই জরিপে বলা হয়েছে এই মুহূর্তেই যদি ভারতে লোকসভা নির্বাচন হয় তবে ফের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)। ৫৪৩ বিশিষ্ট লোকসভার আসনে এই জোট পেতে পারে ৩০৯টি আসন। যদিও ২০১৪ সালের তুলনায় এই সংখ্যাটা কিছুটা কম (৩৩৬)। প্রাপ্ত ভোটের হার ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (ইউপিএ) ১০২ টি আসনে জয় পেতে পারে, প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে এই হার ২৭ শতাংশ। অন্যরা সম্মিলিতভাবে পেতে পারে ১৩২ আসন (ভোটের হার ৩৩ শতাংশ)।
এমওটিএন’এর পক্ষে উত্তরদাতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে কোন ইস্যু তাদের কাছে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়? সেই প্রশ্নের উত্তরে ২৯ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন ‘বেকারত্ব’। ২৩ শতাংশ বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে দুর্নীতির বিষয়টি (১৭ শতাংশ)। অন্য যে বিষয়গুলি আগামী নির্বাচনে ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে তার মধ্যে রয়েছে নারী নিরাপত্তা (৬ শতাংশ), কৃষকদের দুর্দশা (৬ শতাংশ), গোরক্ষার নামে মানুষ পিটিয়ে মারা (৩ শতাংশ) সন্ত্রাস (২ শতাংশ)।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বিষয়টি সবচেয়ে রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে কি না সে প্রশ্নের উত্তরে ৪৪ শতাংশ জানিয়েছেন হ্যাঁ, ৩৮ শতাংশ মনে করেন নাও পড়তে পারে।
বিডি প্রতিদিন/২৬ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল