মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ইরানের পক্ষে কত দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরি করা সম্ভব?

ইরানের পক্ষে কত দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরি করা সম্ভব?

ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনা -এএফপি

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতির যে পরমাণু চুক্তি হয়েছিল গতকাল তার ইতি টেনে দিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে আগে বের হয়ে গেলেও ওই চুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য দেশ অর্থাৎ জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়াসহ অন্য দেশগুলোর অনুরোধে এত দিন ওই চুক্তি বিছুটা মেনে চলছিল ইরান। কিন্তু জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ইরানের মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তি  থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এটি এমনিতে খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। এখন তার যবনিকা টানা হলো।

মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে অনেকেই এখন প্রশ্ন তুলছেন, ইরান কি তাহলে এখন পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে হাত দিতে চলেছে? যদি তারা চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে পুরোদমে পরমাণু কর্মসূচি চালাতে থাকে, তাহলে কত দ্রুত তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে?

ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, সেজন্যই তাদের সঙ্গে চুক্তিটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীনসহ বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। ওই পরমাণু চুক্তিটির সবচেয়ে বড় গুরুত্ব ছিল- এটি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের শঙ্কা দূর করেছিল। এই চুক্তির আগে এমন আশঙ্কা ছিল যে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি  ঠেকানোর নামে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালাতে পারে। কিন্তু জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর যে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ইরান এখন মনে হচ্ছে সব বিধিনিষেধই উপেক্ষা করবে।

কত দ্রুত ইরান বোমা তৈরি করতে পারবে : ২০১৫ সালের আগে পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের বিরাট মজুদ ছিল ইরানে। যুক্তরাষ্ট্রের  গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২০ হাজার সেন্ট্রিফিউজেস ছিল তাদের। দশটি পরমাণু বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট এগুলো। সে সময় মার্কিন বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, ইরান যদি খুব তাড়াহুড়ো করে কোনো পরমাণু বোমা বানাতে চায়, তাদের সময় লাগতে পারে দুই থেকে তিন মাস। তবে এখন যেহেতু আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের কারণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অনেক সীমিত, তাই বোমা তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেও ইরানের সময় লাগবে অনেক  বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কমপক্ষে এক বছর। তবে ইরান যদি সব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ইউরেনিয়াম পরিশোধনের মাত্রা ২০ শতাংশে উন্নীত করে, তাহলে ছয় মাস বা তারও কম সময়ের মধ্যে এটি করা সম্ভব।

পরমাণু চুক্তির অন্য দেশগুলো অবশ্য এখনো আশা করছে ইরান ওই পথে যাবে না। রবিবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। এতে তারা ইরানের প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছেন চুক্তি-বিরোধী কিছু না করার জন্য। বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর