ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের সুপ্রীম কোর্টে মামলা করেছেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মাধ্যমে এবং ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সহযোগিতায় শুক্রবার মামলাটি করেন তিনি।
নুরুল ইসলাম পুনরায় সঠিক বিচার পাবার আশায় ৮ জুলাই আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের নির্বাহী পরিচালক কিরীট রায়ের কাছে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারে কার্যকরি উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে একটি আবেদন করেন।
জানা গেছে, ৩০ জুন ৩ মাস ৫ দিন পর বিচার কাজ শুরু হয়। বিএসএফ’র বিশেষ আদালতের সোনারী ছাউনীতে বিএসএফ’র আধিকারীক সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারিক প্যানেল বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য এ বিচার কাজ পরিচালিত হয়। ৩ কার্যদিবস চলার পর ২ জুলাই মধ্যরাতে ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায়ে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেন আদালত।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, 'দুই দফা সাক্ষ্য দেওয়ার পরও তার মেয়ে হত্যার ন্যায্যবিচার পাননি তিনি। তিনি এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার মতে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তা না করে ভারতের বিএসএফ বিচারের নামে তামাশা করেছে। তাই ভারত সরকারের কাছে সঠিক বিচার পাবার আশায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আবেদন পত্রে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম জানান, '৭ জানুয়ারি ২০১১ সালে আমার কন্যা ফেলানী খাতুনকে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নম্বর ৯৪৭ এর কাছে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার পর বিএসএফ তার আদালতে অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ গঠন করে। ২ বছর ৮ মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ রায় দেন বিএসএফ এর আদালত। সেই রায় যর্থাথ মনে করেনি বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন। এর পর ২ জুলাই ২০১৫ বিএসএফ কোর্ট অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে পুনরায় রায় দেন। এ রায়ে হতবম্ভ হয়ে পড়েন ফেলানীর বাবা।'
নুরুল ইসলাম বলেন, 'বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করার পরও সে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আমি বিস্মিত ও মর্মাহত। আমার কন্যার হত্যাকাণ্ডে অমিয় ঘোষ যেহেতু সরাসরি জড়িত সে কারণে এর দায় ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণের। আমার নিরীহ নিরস্ত্র কন্যা ফেলানী হত্যাকাণ্ডে জড়িত অমিয় ঘোষকে শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই ভারত সরকারের কাছে।’
এ ব্যাপারে ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা মাসুম উচ্চ আদালতে মামলাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানানো হয়।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ অাগস্ট ২০১৫/শরীফ