রোসারিও। লিওনেল মেসির শহর। আর্জেন্টাইন জাদুকরের জন্মের ঠিক আট মাস পর এ শহরেই জন্ম অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার। একই শহরের দুই শিশু বেড়ে উঠেছেন সমানতালে। তবে ফুটবলার হিসেবে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বেড়ে উঠতে সময় লেগেছে। বালক মেসি ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৯৫ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সেই। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্যারিয়ার শুরু করতে সময় লেগেছে ২০০১ সাল পর্যন্ত। তবে তিনি যখন একজন মিডফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামলেন, দেখা গেল খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ধীরে ধীরে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডের সেরা তারকা হয়ে উঠলেন তিনি। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তাকে ঘিরেই আবর্তিত হবে আর্জেন্টিনার শিরোপা স্বপ্ন।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছে লিসবনের দ্যা লুইজ স্টেডিয়ামে। সে ম্যাচে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার নিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তিতুল্য কোচ স্যার আলেঙ্ ফার্গুসনের হাত থেকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার পাশাপাশি শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিটা ডি মারিয়ার জন্য খুব প্রয়োজন ছিল। লিওনেল মেসির সঙ্গে তার জুটিটা মজবুত হলেই কেবল আর্জেন্টাইনদের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। বিশ্বকাপের আগে এমন এক স্বীকৃতি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে নিঃসন্দেহে নির্ভার করে তুলবে। ২০০৮ সাল থেকে আর্জেন্টিনার জার্সিতে খেলছেন ডি মারিয়া। ৪৫ ম্যাচে করেছেন ৯টি গোল। ২০১০ বিশ্বকাপেও ছিলেন মিডফিল্ডের অন্যতম তারকা। ব্রাজিলে তাকে ঘিরে আশা-আকাঙ্ক্ষা আরও বিস্তৃত হয়েছে।
লিওনেল মেসিকে নিয়ে সমালোচনা শেষ নেই। ক্লাবের জার্সিতে যেমন জ্বলে উঠেন, জাতীয় দলে তেমন নন তিনি। তবে ডি মারিয়া বরাবরই মেসির পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। এমনকি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যকার ঠাণ্ডা যুদ্ধের মধ্যেও জাতীয় দলের অধিনায়কের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন তিনি। ডি মারিয়া-মেসির চমৎকার এক সম্পর্কই কি প্রকাশ হয় না এতে! আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ নিয়ে তেমন সমস্যা নেই। এখানে লিওনেল মেসি, আগুয়েরো, লেভেজ্জি, হিগুয়েনদের মতো তারকারা রয়েছেন। সমস্যা আছে মিডফিল্ড এবং ডিফেন্স নিয়ে। মিডফিল্ডের সমস্যা দূর করতে পারেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এর প্রমাণ তিনি দিয়েছেন অনেক আগেই। ২০০৭ সালে আর্জেন্টিনার জার্সিতে জয় করেছেন যুব বিশ্বকাপ। ঠিক এক বছর পরই বেইজিং অলিম্পিকে জয় করেছেন স্বর্ণ। ফাইনালে তার গোলেই নাইজেরিয়াকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ২৬ বছরের এক পরিপূর্ণ ফুটবলার। রোসারিও সেন্ট্রালে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা হয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। ২০১০ সাল থেকে রিয়াল মাদ্রিদে খেলছেন তিনি। এরই মধ্যে রিয়ালের প্রধানতম তারকাদের একজন হয়ে উঠেছেন এ আর্জেন্টাইন। বিশ্বকাপে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে আলবেসিলেস্তরা। বিশেষ করে মেসির সফলতার জন্য অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার সফল হওয়াও খুব প্রয়োজন।