দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে পূর্বঘোষিত প্রথম দিনের সর্বাত্মক ধর্মঘট চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বুধবার সকাল থেকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দিন তাদের এই ‘সর্বাত্মক ধর্মঘট’ চলবে। তবে পূর্ব নির্ধারিত ফাইনাল পরীক্ষা অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ আন্দোলনে অঅংশগ্রহণকারী ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জানান, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর আগে অবরোধ ঠেকাতে রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিবহন পুল থেকে বাস সরিয়ে ফেলছে খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা তা ‘বানচাল’ করে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
সকাল থেকে আন্দোলনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন ফটকে ব্যানার টানিয়ে অবস্থান নিয়েছে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে না পেরে ভবনের বাইরে ঘোরাফেরা করছেন। এছাড়া বুধবার দুপুরে অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করার কথা রয়েছে বলে জানান ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়।
উল্লেখ্য, জাবিতে চলমান সাড়ে ১৪শ' কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট থেকে ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা দেয়ার অভিযোগ উঠে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারাজানা ইসলামের বিরুদ্ধে। গত ৯ জুলাই ঈদুল আযহার পূর্বে ঈদ সেলামি হিসেবে এই টাকা দেয়া হয় বলে জানা যায়। পরবর্তীতে ২২ আগস্ট বাংলাদেশ প্রতিদিনে 'উন্নয়ন প্রকল্পের দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের পকেটে' শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হলে ঘটনার তদন্তের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' সংগঠনটি। কিন্তু অভিযোগের শুরু থেকেই এই ঘটনাকে মিথ্যা দাবি করে আসছিলেন উপাচার্য। পরে শাখা ছাত্রলীগের তিনজন শীর্ষ নেতা ঈদ সেলামি হিসেবে উপাচার্যের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা পেয়েছেন এমন স্বীকারোক্তি দিলে তদন্তের দাবি বাদ দিয়ে সরাসরি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' সংগঠনের আন্দোলনকারীরা।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব