বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের (সিএমএম) ৪নং এজলাসে হাজিরা দেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, 'আজ আদালতে জাবি শিক্ষার্থীদের হাজিরার দিন নির্ধারিত ছিল। আদালত আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী হাজিরার তারিখ নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে ওই দিন তাদের আবার আদালতে হাজির হতে হবে।”
এদিকে হাজিরা শেষে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সিএমএম আদালতের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসাইন বলেন, 'শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ঝুলিয়ে এ ধরনের হয়রানি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত। কিছু অসৎ ব্যক্তির পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এ কাজগুলো করছেন। তিনি নিজেও বুঝতে পারছেনা যে তিনি কি করছেন। আমরা আশা করবো অতি দ্রুত তিনি এ মামলা প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নিবেন।”
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাস চাপায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাজমুল হাসান রানা এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ছাত্র আরাফাত হোসেন।
প্রতিবাদে ২৬ মে এবং ২৭ মে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। ২৭ মে বিকালে পুলিশের লাঠিপেটায় আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হয়। পুলিশের লাঠিপেটা, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেটে সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ আহত হয় ১০ শিক্ষার্থী।
পরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সেখানে ভাঙচুর চালায়। রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ ৫৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সব শিক্ষার্থীকে ২৮ মে রোববার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন।
ওই রাতেই আশুলিয়া থানা পুলিশ উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে থাকা ১০ ছাত্রীসহ আন্দোলনকারী ৪২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। পরদিন বিকালে ওই শিক্ষার্থীরা জামিনে মুক্তি পান।
এ ঘটনার সাত দিন পরে গত ৩ জুন শনিবার পুনরায় এক জরুরী সিন্ডিকেট সভায় আগামী ৮ জুন থেকে হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সিন্ডিকেটের আদেশে বলা হয়, মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন কর্মকর্তা মাহতাব উজ জাহিদ বলেন, 'মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সিদ্ধান্তের কথা আমার জানা নেই।'
বিডি প্রতিদিন/ ৪ জুলাই, ২০১৭/ ই জাহান