মহাসড়ক ও উপাচার্যের বাসভবন অবরোধ এবং ভাঙচুরের অভিযোগে ৫৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ‘প্রতিবাদের নাম জাহাঙ্গীরনগর’ শীর্ষক ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে পুরাতন কলা ভবন প্রদক্ষিণ করে নতুন কলা ও মানবিকী ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তারা ৭ দিনের মধ্যে মামলা তুলে নেয়ার দাবি জানান। এর মধ্যে মামলা তুলে না নিলে কঠোর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অলিউর সানের সঞ্চালনায় সংগঠনটির সভাপতি ইমরান নাদিম বলেন, “প্রশাসন মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে যে সকল কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস আমাদের দিয়েছেন আমরা ৭ দিনের মধ্যে তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো। আর সেই কর্মসূচি কেউ আটকাতে পারবে না।”
সার্বিক ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ৬ সদস্য বিশিষ্ট যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তার সমালোচনা করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, “এই পক্ষপাতদুষ্ট কমিটির প্রতি কারো আস্থা নেই। এই কমিটিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছে। তদন্ত কমিটির সদস্য তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই যদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তি চাওয়ার মিছিলে অংশগ্রহণ করে তবে সেই কমিটি কখনোই নিরপেক্ষ হতে পারে না।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীরা আপনাদের ৭ দিন সময় দিয়েছে। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহারে যে সকল উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন তা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। তা না হলে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দেবে কিভাবে নায্য দাবি আদায় করতে হয়।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনিছা পারভীন (জলী), ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক মিখা পিরেগু, ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহাথির মুহাম্মদ, জাবি সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসাইন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৭ মে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকালে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ৫৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ৮ জন শিক্ষার্থী মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসে। অনশনের তৃতীয় দিন সোমবার, ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় উপ-উপাচার্য আমির হোসেন মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিলে অনশন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার