রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ তুলেছেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোছা. রুখসানা পারভীন।
গত ৩১ জুলাই উপাচার্য বরাবর এ অভিযোগ করেন ওই শিক্ষিকা। এছাড়াও আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন অধ্যাপক রুহুল আমীন।
সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের অভিযোগ, অধ্যাপক রুহুল আমীন স্যারের অধীনে তিনি পি.এইচ.ডি. করছিলেন। ২০১২ সালে পি.এইচ.ডি. শুরু করার পর প্রথম প্রথম রুহুল আমীন তাকে এড়িয়ে চলতেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে ওই শিক্ষিককে নানাভাবে এ্যাকাডেমিক ও যৌন হয়রানী করা শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সূচির বাইরেও তাকে চেম্বারে ডাকতেন। চেম্বারের কম্পিউটারে বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও দেখানোর চেষ্টা করতেন। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও আকার-ইঙ্গিতে যৌন হয়রানী করতেন। এমনকি গত ২৬ এপ্রিল স্যার তাকে সন্ধ্যার পর ওই শিক্ষকের বাসায় যেতে বলেন। এইসব ঘটনা সহকারী অধ্যাপক রুখসানা তার স্বামী ও বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষককে জানায়। রুহুল আমীন স্যারের অত্যাচার আমার ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করে। আমি গত ২৬ তারিখেই তাঁর অধীনে পিএইচডি না করার সিদ্ধান্ত নেন ও সুপারভাইজার পরিবর্তনের জন্য বিভাগ বরাবর আবেদন করেন রুখসানা পারভীন।
রুখসানা পারভীন জানান, আমি চেয়েছিলাম আমার পিএইচডি দ্রুত শেষ করতে। লোকলজ্জার ভয়ে আমি এতোদিন মুখ খুলিনি। কিন্তু আমি সুপারভাইজার পরিবর্তন করার কারণে রুহুল আমীন স্যার তার ক্ষমতার জোরে বিভাগের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে জোট বেঁধে আমাকে নানাভাবে হয়রানী ও মানসিক নির্যাতন করা শুরু করেছেন। আমি বাধ্য হয়ে গত ৩১ জুলাই উপাচার্য বরাবর বিভাগের কতিপয় শিক্ষকের মানসিক নির্যাতন হতে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুললাম।
এ বিষয়ে অধ্যাপক রুহুল আমীন জানান, কম্পিউটারে অশ্লীল ভিডিও দেখানো তো দুরের কথা, আমি কম্পিউটার চালাতেই পারি না। আমি কোনো দিন রুখসানাকে আমার চেম্বারে ডাকিনি। রুখসানার সঙ্গে বিভাগের কোনো শিক্ষকেরই ভালো সম্পর্ক নেই। সকলের সঙ্গেই সে খারাপ আচরণ করে। তার বিরুদ্ধে যে কথা বলে, তার বিরুদ্ধেই বিভিন্ন অপপ্রচারণা চালায় রুখসানা। এর আগে কখনো এমন অভিযোগ সে কারো কাছে করেনি। আমরা বিভাগের ১১ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দেয়ার কারণেই এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনা হয়েছে সব বানোয়াট। অভিযোগকারী এসবের বিষয়ে কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না। ভিত্তিহীন এসব অভিযোগের মাধ্যমে আমাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩ আগস্ট, ২০১৭/ তাফসীর