কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে(কুবি) কোরআনের এক হাফেজসহ দুই শিক্ষার্থীকে শিবির বলে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মারধরের পরে এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও এক সহকারী প্রক্টর উপস্থিত হলেও অনেকটা নির্বাক থাকতে দেখা যায় তাদের।
বুধবার দুপুরে শিবির বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের একটু দূরে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এ নিয়ে ফোনে কথা বললে এক সাংবাদিককে থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার কথা বলেন প্রক্টর ড. কাজী কামাল উদ্দিন।
জানা যায়, সিলেটে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে আহত করার প্রতিবাদে বুধবার ক্যাম্পাসে শিবির বিরোধী বিক্ষোভ করে শাখা ছাত্রলীগ। বিক্ষোভ শেষে গণিত ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানকে বাস থেকে নামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে চায়ের দোকানের পাশে নিয়ে আসে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে তাকে বেধড়ক পিটাতে থাকে ছাত্রলীগ কর্মী মীর (নৃবিজ্ঞান), বিদুৎ (পদার্থ), সাদ (নৃবিজ্ঞান) ও এআইএস বিভাগের দ্বীন ইসলাম লিখন, শাহাদাৎ হোসেন সৌরভ, মাসুদসহ আরো অনেকে।
এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী। মারধরের ঘটনার পরে ঐ শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টর মোঃ কাজী কামাল ও সহকারী প্রক্টর খলিলুর রহমান। এ সময় তারা নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে আহত আব্দুর রহমানকে অটো রিকশা করে পাঠিয়ে দেন প্রক্টর। এ ঘটনার ঠিক পরপরই এক কোরআনের হাফেজ ও ইংরেজি বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলামকে সামাজিক বন বিভাগে শিবির বলে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। তবে যাদের মারা হয়েছে তারা কেউই ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত নয় বলে সাংবাদিকদের জানান ভূক্তভোগীরা।
কেন তাদের মারা হল এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিবির নামধারী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নাশকতা করবে তাদের বিষয়ে ছাত্রলীগ কঠোর অবস্থান নিবে।’
এ বিষয়ে প্রক্টরের ড. কাজী মোহাম্মাদ কামাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি সকালের খবররের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ও সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে ‘থাপড়িয়ে’ দাঁত ফেলে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি ঐ সাংবাদিককে ধমকিয়ে বলেন, ‘আমার বক্তব্যের বাইরে নিউজ লিখবা না।’
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন