বলা হয়, তিনিই প্রথম ইংলিশ ফুটবলার হিসেবে আধুনিক মিডিয়া জগতে আলোড়ন তুলেছিলেন। লিভারপুলের স্বর্ণ যুগের একজন নিপুণ কারিগর ছিলেন তিনি। কি শৈল্পিক দক্ষতায় সব গোল করেছিলেন এনফিল্ডে। অলরেডদের জার্সিতে তিনবার জিতেছেন ইংলিশ ফার্স্ট ডিভিশন (ইংলিশ লিগ)। দুইবার হয়েছেন রানার্সআপ। এফএ কাপ, উয়েফা কাপ, ইউরোপীয়ান কাপ (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) কি জিতেননি কেভিন কেগান। তবে ইংলিশ এই স্ট্রাইকার ট্র্যাজিক হিরোই থেকে গেলেন। ১৯৭৪ আর ১৯৭৮ বিশ্বকাপে বাছাই পর্ব উত্তীর্ণ হতে পারেনি ১৯৬৬'র বিশ্বকাপ জয়ী ইংলিশরা। ১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ক্যারিয়ার শুরু করা কেভিন কেগানের জন্য এরচেয়ে হতাশার আর কি ছিল! কিন্তু কে জানত কেভিন কেগানের ভবিষ্যত এর চেয়েও ভয়াবহ ঘটনা লুকিয়ে রেখেছে!
১৯৮২ বিশ্বকাপে ইংলিশদের সম্পর্কে ভালো কিছু লেখা হয়নি পত্রিকার পাতায়। তারপরও দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত তাদেরকে ধরেই হিসাব কষা হচ্ছিল। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় রাউন্ড খেলল। তবে পশ্চিম জার্মানির অপ্রতিরোধ্য গতির সঙ্গে পারল না তারা। এর মধ্যে কেভিন কেগানকে সাইডলাইনে বসে থেকে দেখতে হলো দলের নিশ্চিত পরাজয়! ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারেননি তিনি। অথচ কোচ গ্রিনউড তাকেই দিয়েছিলেন অধিনায়কের বাহুবন্ধনী! কেবল বিশ্বকাপেই নন, কেগান ইংল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন দীর্ঘদিন থেকেই। ১৯৭৬ সালে গ্যারি ফ্রান্সিস ফর্মহীন হওয়ার পর থেকেই ছিল তার আধিপত্য। ১৯৮২ বিশ্বকাপে কেভিন কেগানের অনুপস্থিতিতে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেন ডিফেন্ডার মিক মিলস। কেভিন কেগানের আরেকটি দীর্ঘশ্বাস ছিল ৫ জুলাইয়ের ম্যাচটি। ইনজুরি ফেরত কেগান সেদিন বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন অল্প সময়ের জন্য। স্বাগতিক স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচ। ডি বঙ্রে ভিতরে দারুণ একটা হেডের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গোল পেলেন না ইংলিশ স্ট্রাইকার। গোল শূন্য ড্রয়ের পর ইংলিশদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। সেদিন কেগান গোল করলে বিশ্বকাপের চিত্র ভিন্নও হতে পারতো! বিশ্বকাপে না খেলেই অধিনায়কের খেতাব নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল কেগানকে। এমন ট্র্যাজিক হিরো খুব কমই আছে ফুটবল ইতিহাসে। ১৯৮২ বিশ্বকাপের পর কেভিন কেগানের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন নতুন কোচ ববি রবসন। তবে কেগানকে দল থেকে বাদ দেওয়ায় কম যন্ত্রণা পোহাতে হয়নি রবসনকে!