প্রচণ্ড রৌদ্র। গা ঝলসে যাওয়ার মতো উত্তাপ। গা জ্বালানো তাপ এড়াতে সবাই যখন ব্যস্ত, তখন মিরপুর ক্রিকেট একাডেমি মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন সালমা খাতুনরা। গরমে দাঁড়িয়ে শিষ্যদের নির্দেশনা দিচ্ছেন কোচ গামাগি। সালমা, শুকতারা, জাহানারারা কোচের নির্দেশনা মেনে অনুশীলন করছেন গভীর মনোযোগে।
মহিলা ক্রিকেটারদের এই অনুশীলন আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজকে সামনে রেখে। ৩টি ওয়ানডে ও ৫টি টি-২০ খেলতে ১৫ অক্টোবর ঢাকায় পা রাখছে প্রোটিয়াস মহিলা ক্রিকেট দল। দক্ষিণ আফ্রিকা মহিলা ক্রিকেট দলের সিরিজ সামনে রেখে অনুশীলন শুরু হলেও সালমাদের মূল টার্গেট টি-২০ বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব। আগামী ২৬ নভেম্বর বাছাইপর্ব শুরু থাইল্যান্ডে। চূড়ান্ত পর্বে খেলবে বাছাইপর্বের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল। বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ স্বাগতিক থাইল্যান্ড। ২৮ নভেম্বর ম্যাচটি হবে থাইল্যান্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। ২৯ নভেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড এবং ১ ডিসেম্বর তৃতীয় ম্যাচের প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন খেলবে ফাইনাল। টি-২০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজকে সামনে রেখে অনুশীলন হলেও কিন্তু এখন আলোচনায় পাকিস্তান সফর। পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা সালমাদের। কবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পাকিস্তানের নিরাপত্তা অবস্থা দেখার জন্য খুব দ্রুত একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে বিসিবি। দলটির রিপোর্টের পর সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি পাকিস্তানে মহিলা ক্রিকেট দলকে পাঠানো যাবে কি না।
সালমাবাহিনী গত সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেলেছে। ইনচেন এশিয়াডে রূপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেলেননি সালমারা। তাই ফিটনেস ফিরিয়ে আনতে অনুশীলন করছেন সালমারা। সালমাদের এখনকার ফিটনেস নিয়ে অবশ্য সন্তুষ্ট নন কোচ গামাগি, 'দুই মাস মেয়েরা ক্রিকেটের সঙ্গে ছিল না। ফিটনেস নিয়ে একটু ঝামেলা রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ ফিটনেস অনুশীলনের পর ব্যাট ও বল নিয়ে নেমে পড়বে ক্রিকেটাররা। তার আগেই হয়তো ফিটনেস ভালো হয়ে যাবে দলের।' দীঘদিন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট না খেলায় একটু সমস্যায় রয়েছেন সালমারা। কিন্তু সেটা দ্রুত কাটিয়ে উঠবেন বলেই বিশ্বাস কোচের, 'প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট না খেললেও তারা খেলার মধ্যেই ছিল। তাই কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারপরও আশা করছি, তারা অনুশীলন করে নিজেদের প্রস্তুত করে নিবেন।'
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ, পাকিস্তান সফর এবং টি-২০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব-সবগুলোকেই পাখির চোখে দেখছেন কোচ গামাগি। শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভুত কোচ আত্মবিশ্বাসী টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার, 'আমার ভাবনায় এখন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। এরপর আমাদের ভাবনায় পাকিস্তান সিরিজ (যদি হয়)। তবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বও রয়েছে। আমরা আত্মবিশ্বাসী টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার। দলের ক্রিকেটাররা অভিজ্ঞ ও সিনিয়র। তাই চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন দেখতেই পারি।' পাকিস্তান সফর নিয়ে ক্রিকেটাররাও দ্বিধাবিভক্ত। একপক্ষ বলছেন, ক্রিকেট বোর্ড নির্দেশ দিলে যেতেই হবে পাকিস্তান। অন্যপক্ষ বলছে তাদের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম যেখানে নিরাপদ নন, সেখানে তারা কিভাবে নিরাপদ বোধ করবেন। সালমাদের মধ্যে বিভাজন থাকলেও বিসিবি চাচ্ছে ভেন্যুটি যাতে লাহোর হয়। উল্লেখ্য, লাহোরেই তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে জিম্বাবুয়ে।