হুগলি নদীর পাড়ে প্রতিদিনের মতো ভিড় ছিল না শনিবার। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত জোড়া সাঁকোতেও দুপুরের পর লোক সমাগম খুব একটা ছিল না। মান্না দে-র বিখ্যাত গান ‘কফি হাউজের আড্ডা’র স্থান কলেজ স্ট্রিটে গিয়েও দেখা যায়নি কোনো আড্ডা। সবার গন্তব্য একদিকেই, তীর্থ ইডেন গার্ডেন। স্টেডিয়ামের পাশের ধর্মতলা মোড়ে যেন মানুষের বিস্ফোরণ! দুপুরের পর থেকেই পা রাখার উপায় নেই শহীদ মিনার চত্বরে। আকাশবাণী ভবন ও রাজ ভবনের আশপাশে লোকে লোকারণ্য। ‘ভারত-পাকিস্তান’ ম্যাচ নিয়ে কলকাতাবাসী রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু উত্তেজনার আগুনটা যেন নিভে যায় শেষ বিকালের ঝড়ো বৃষ্টিতে। খেলা শুরু হয় এক ঘণ্টা দেরিতে। ২০ ওভারের ম্যাচ নেমে আসে ১৮ ওভারে।
গতকাল শনিবার বাইরের উত্তেজনার ছিটে ফোঁটাও দেখা যায়নি মাঠের ভিতরে। ছয় উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত। বৃষ্টির সময় গ্যালারিতে থাকা অসহায় দর্শকের মতো ২২ গজে অসহায় ছিলেন কাল পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আফ্রিদির পাকিস্তানে ১১৮ রানের বেশি করতে পারেনি। আর এই সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ১৩ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় স্বাগতিকরা।
এই জয়ে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত থাকার ইতিহাস অক্ষুণ্ন থাকল ভারতের। ৩৭ বলে ৫৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বিরাট কোহলি।
পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার পর ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যান বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের মজাই আলাদা।’
প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় ভারতের কাছে ম্যাচটি অনেকটা ‘ডু অর ডাই’। পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল ভারত। সেই সঙ্গে ইডেন-জয়ও হয়ে গেল কোহলিদের।
এর আগে ওয়ানডেতে ইডেনের মাটিতে কখনো পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি ভারত। এমন জয়ে দর্শকরাও উচ্ছ্বসিত। তাই তো দেখা যায়, ধোনির ছক্কায় স্কোর সমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজি শুরু হয়ে যায় কলকাতায়।
বিডি-প্রতিদিন/২০ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব