বাঁচা-মরার লড়াই ছিল শ্রীলঙ্কার। জয় পেলে বেঁচে থাকবে আশা, হারলেই বিদায়। এমন কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু বাংলাদেশ জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নেমেছিল। সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়েই খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। আর তাই বাংলার কিশোরদের দাপটে উড়ে যেতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। শূন্য হাতে এবারের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে তাদেরকে নিতে হয়েছে বিদায়। ৪-০ গোলে জয়ের ম্যাচে শুধু জয়ই পায়নি বাংলাদেশ, একই সঙ্গে নিশ্চিত হয়েছে সেমিফাইনালও।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্দক ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ছোট ছোট পাস আর স্কিলের নৈপুণ্যে প্রথম মিনিটেই গোল প্রায় আদায় করে নিয়েছিল বাংলাদেশের কিশোররা। বলও ঢুকেছিল শ্রীলঙ্কান জালে। কিন্তু গোলের উল্লাসে মাতোয়ারা গোটা স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি কাঙ্ক্ষিত গোলের জন্য। প্রথমার্ধের ৪ মিনিটেই সম্মিলিত আক্রমণ থেকে শ্রীলঙ্কান বক্সে মধ্যে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর লঙ্কান ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে দুর্দান্ত শটে লঙ্কার জাল কাঁপান সরওয়ার জামান নিপু। উল্লাসে ফেটে পড়ে স্টেডিয়ামের হাজার দশেক দর্শক।
এর ঠিক ৬ মিনিট পরেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের। তবে জটলা থেকে বল পেয়ে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন প্রথম গোলদাতা নিপু। প্রথমার্ধের ২০ মিনিটে সাদ উদ্দিন বক্সে বাইরে জোরালে এক শট নেন। তবে শ্রীলঙ্কানদের অন্তরাত্দা কাঁপিয়ে বল সাইডপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৩ মিনিট পর আবারও সাদ উদ্দিনের কল্যাণে আক্রমণে ওঠে বাংলাদেশ। বাম উইং থেকে দুই লঙ্কান ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক মাইনাস করেন বক্সে। তবে আবেদীন রাকিবে প্লেসিং শট চলে যায় পোস্টের বাইরে। প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটে খলিল ভুঁইয়ার তীব্রগতির এক শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লঙ্কান গোলরক্ষক মোহাম্মদ ফাজলান। ওই এক গোল নিয়েই প্রথমার্ধে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু তীব্র গোল ক্ষুুধায় থাকা বাংলাদেশের কিশোররা দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আবারও কাঁপাতে শুরু করে লঙ্কান ডিফেন্সকে। ফল আসতে দেরি হয়নি বেশি। দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিটে চমৎকার বোঝাপড়ায় বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের এক জোরাল শটে গোল করেন আবেদীন রাকিব। প্রথম গোলদাতা সরওয়ার জামান নিপুর শট আবারও সাইডপোস্টে লেগে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধের ৩১ মিনিটে মোহাম্মদ শাওনের কর্নার কিক থেকে মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান দর্শনীয় হেডে গোল করে আবারও এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে। ৪১ মিনিটে শেষ গোলের উৎসবে মাতে গোটা স্টেডিয়াম। মোহাম্মদ শাওনের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় গোল আদায় করেন সরওয়ার জামান নিপু। ম্যাচে ৪-০ গোলের ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। তবে গোলের ব্যবধান হতে পারত আরও বেশি। তিনটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ায় ৪ গোল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এছাড়াও সহজ কয়েকটি সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশের।