নিরুত্তাপ এক ফাইনাল চলছিল সিডনির অস্ট্রেলিয়া স্টেডিয়ামে। এশিয়ান কাপের ফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ম্যাসিমো লুঙ্গোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এই ব্যবধানে দূর করার সুযোগই খুঁজে পাচ্ছিল না কোরিয়ানরা। দ্বিতীয়ার্ধের নিরুত্তাপ ৪৫ মিনিট শেষ হওয়ার পর সিডনির দর্শকরা যখন রেফারির শেষ বাঁশির প্রহর গুনছিলেন তখনই দেখা দিল প্রাণচাঞ্চল্য। মধ্য মাঠ থেকে কাউন্টার আক্রমণে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায় কোরিয়ানরা। এই গতি অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্সকে তছনছ করে দিয়ে পৌঁছে যায় ডি বক্সে। ফিনিসিং শটটা দেন সান হিয়াঙ মিন। গোলরক্ষক এবং ডিফেন্ডাররা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দেখলেন, ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে সমতায় ফিরে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া! তবে এই সমতা কেবল ক্ষণিকের জন্যই। ম্যাচ অতিরিক্ত মিনিটে গড়ানোর পর কোরিয়ানদের লক্ষ্য ছিল টাইব্রেকারে নিয়ে যাওয়া। তা আর হলো কই! ১০৫ মিনিটে জেমস ট্রয়সি গোল করে দূর করে দেন সব ব্যবধান। ২-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ানরা এশিয়ান কাপে প্রথম শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠে।
দীর্ঘ ৫৪ বছর পর এশিয়ান কাপে শিরোপা জয়ের স্বাদ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল কোরিয়ানরা। সেই ১৯৬০ সালে সর্বশেষ এশিয়ান কাপ জয় করেছিল তারা। এরপর বেশ কয়েকবার ফাইনাল খেললেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘদিন পর শিরোপার জয়ের উৎসব করতে চেয়েছিল তারা। তা আর হলো না। সকারুদের অপ্রতিরোধ্য গতির মুখে ভেসে গেল কোরিয়ানদের স্বপ্ন। বিপরীত দিকে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপ জয়ের গৌরব অর্জন করল অস্ট্রেলিয়া। গতবার কাতারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপের ফাইনালে জাপানের কাছে পরাজিত হয়ে শিরোপাবঞ্চিত হয়েছিল সকারুররা। তবে এবার নিজেদের মাটিতে ভক্তদের আর হতাশ করেননি টিম কাহিলরা। ২-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে দূর করে দেন সব হতাশা। সিডনির দর্শকদের পাশাপাশি পুরো অস্ট্রেলিয়াকেই ভাসিয়ে দেন সুখের সাগরে। অন্যদিকে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে লাল জার্সি গায়ে বসে থাকা কোরিয়ান ভক্তরা আরও একবার হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরেন।